একটি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, যে সম্প্রতি তার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, তার ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবন এখন অনিশ্চয়তার মুখে। কারণ তার মা-বাবা চাচ্ছেন তার বড় ভাইয়ের বিয়ের খরচ যোগাতে তার উচ্চ শিক্ষার জন্য জমানো অর্থ ব্যবহার করতে।
পরিবারে আর্থিক বিষয় নিয়ে মতবিরোধ নতুন নয়, তবে সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবনের সঙ্গে জড়িত এমন সিদ্ধান্তের কারণে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
জানা গেছে, ছেলেটির দাদা-দাদি তার জন্মের সময়ই একটি শিক্ষা তহবিল তৈরি করেছিলেন, যা দিয়ে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার খরচ প্রায় মিটে যাওয়ার কথা। ছেলেটি জানায়, তার মা-বাবা সবসময় এই তহবিলের কথা জানতেন এবং সে অনুযায়ীই সে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সাজিয়েছিল।
কিন্তু সম্প্রতি তার ২৬ বছর বয়সী বড় ভাই বিয়ের ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
ভাইয়ের বিয়ের খরচ জোগানোর জন্য ছেলেটির মা-বাবা এখন চাচ্ছেন তার শিক্ষা তহবিল থেকে কিছু টাকা নিতে। বিষয়টি জানার পর ছেলেটি তাদের এই সিদ্ধান্তে তীব্র আপত্তি জানায়।
তার মতে, এই টাকা তার শিক্ষার জন্য, বিয়ের জন্য নয়। তবে, মা-বাবার যুক্তি ছিল, পরিবারের সম্মান সবার আগে।
তারা ছেলেকে পরামর্শ দেন, প্রয়োজনে সে যেন ছাত্র ঋণ নেয়। এমনকি, ছেলের বড় ভাই ও তার হবু স্ত্রীও নাকি তাকে ‘স্বার্থপর’ বলছেন, কারণ তারা একটি বড় আকারের বিয়ের আয়োজন করতে চান।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ভাইয়ের বিয়ের খরচ ছেলেটির শিক্ষার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে?
অনেকে মনে করেন, ভাইয়েরও উচিত ছাত্র ঋণ নেওয়ার কথা বিবেচনা করা অথবা বিয়ের খরচ কমানো। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার গুরুত্ব এবং পরিবারের মধ্যে আর্থিক বিষয়গুলো কীভাবে দেখা হয়, তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার অবকাশ তৈরি হয়েছে।
সাধারণত, আমাদের সমাজে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য সঞ্চয় করাকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মনে করা হয়।
তবে, পরিবারের অন্য সদস্যদের চাহিদাকেও অনেক সময় গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই ঘটনায় একদিকে যেমন শিক্ষার গুরুত্ব, তেমনি পারিবারিক বন্ধন এবং আর্থিক বিষয়গুলোর মধ্যেকার জটিলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তথ্য সূত্র: পিপল