যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিপ্টোকারেন্সি নীতিতে পরিবর্তনের অঙ্গীকার করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক ‘ক্রিপ্টো সামিট’-এ তিনি এই ঘোষণা দেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ডিজিটাল মুদ্রার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন করে সাজানোর ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জানান, তিনি চান যুক্তরাষ্ট্র ক্রিপ্টোকারেন্সি খাতে বিশ্বনেতা হোক। এর আগে, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ট্রাম্পের কিছুটা দ্বিধা ছিল। তবে এখন তিনি এই শিল্পের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন এবং একে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। সম্মেলনে উপস্থিত ক্রিপ্টো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা ট্রাম্পের এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, আগের প্রশাসনের নীতি ডিজিটাল সম্পদের জন্য অনুকূল ছিল না।
ট্রাম্পের প্রশাসন ক্রিপ্টো শিল্পকে উৎসাহিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, বড় ক্রিপ্টো কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)-এর কিছু কার্যক্রম স্থগিত করা। এছাড়াও, ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার মাধ্যমে ‘কৌশলগত বিটকয়েন রিজার্ভ’ তৈরি করা হবে। এই রিজার্ভের অধীনে, সরকার ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলার মাধ্যমে বাজেয়াপ্ত করা বিটকয়েন বিক্রি করতে পারবে না। বর্তমানে এর মূল্য প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১.৮৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি)। একই সঙ্গে, ট্রেজারি ও বাণিজ্য বিভাগকে অতিরিক্ত বিটকয়েন কেনার জন্য বাজেট-নিরপেক্ষ পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদেশটিতে ‘ডিজিটাল অ্যাসেট স্টকপাইলের’ কথাও বলা হয়েছে, যেখানে সরকার বিটকয়েন বাদে অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি জমা রাখবে। সম্প্রতি, ট্রাম্প এক ঘোষণায় জানান, সরকার স্বল্প পরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি যেমন XRP, Solana এবং Cardano-ও ধরে রাখতে চায়। তবে, ঠিক কোন কারণে তিনি এই ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন, তা স্পষ্ট নয়। এই ঘোষণার পর ক্রিপ্টো কমিউনিটিতে আলোচনা শুরু হয়েছে যে সরকার বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে কোনোটিকে বেছে নেবে কিনা।
ভ্যান্ডারbilt ল’ স্কুলের অধ্যাপক ইয়েশা যাদব মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত এই ধরনের বিতর্ক এড়িয়ে যেতে চাইছে।
ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সি বিষয়ক পদক্ষেপে ব্যক্তিগত লাভের বিষয়গুলোও সমালোচিত হয়েছে। তবে, হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের মূল লক্ষ্য হল ন্যায্য ও স্বচ্ছ নীতিমালার মাধ্যমে ক্রিপ্টো শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া। তারা চান, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবন বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
উল্লেখ্য, ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি অত্যন্ত অস্থির বাজার। তাই, এতে বিনিয়োগের আগে ভালোভাবে সবকিছু জেনে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস