আসন্ন একটি বিরল চন্দ্রগ্রহণে রাতের আকাশে চাঁদের রঙ লাল হয়ে উঠবে। এই দৃশ্য দেখা যাবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায়, তবে আফ্রিকা ও ইউরোপের কিছু অংশেও হয়তো এর আংশিক দেখা মিলতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই ঘটনাটি রাতের আকাশে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করবে।
আসলে, যখন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখায় আসে, তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে এবং এই গ্রহণের সৃষ্টি হয়। এই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সূর্যের আলোকরশ্মি চাঁদের উপর পড়ে এবং এর ফলে চাঁদের রঙ লালচে হয়ে যায়। একে ‘ব্লাড মুন’ও বলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় অনুযায়ী, গ্রহণটি বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হয়ে শুক্রবার ভোরে শেষ হবে। বাংলাদেশ থেকে এই গ্রহণ দেখার সঠিক সময় হলো শুক্রবার দুপুর ১টা ২৬ মিনিট থেকে ২টা পর্যন্ত। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই গ্রহণ বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে না। পরিষ্কার আকাশ থাকলে, খালি চোখেই এই দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। কোনো বিশেষ যন্ত্রের প্রয়োজন হবে না।
যদি এই গ্রহণ দেখা থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে মন খারাপ করার কিছু নেই। কারণ, আগামী ৭ই সেপ্টেম্বর আরেকটি গ্রহণ দেখা যাবে, যা এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের কিছু অংশে দৃশ্যমান হবে। এছাড়া, ২০২৬ সালের মার্চ মাসে আবারও এই ধরনের গ্রহণ দেখা যেতে পারে, যা আমেরিকার কিছু অংশে দৃশ্যমান হবে।
ঐতিহাসিক দিক থেকেও এই চন্দ্রগ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। প্রাচীনকালে মানুষজন এই মহাজাগতিক ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করত এবং এর ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করত। উদাহরণস্বরূপ, গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল প্রমাণ করেছিলেন যে, পৃথিবীর আকার গোলাকার। কারণ, চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া সবসময় বক্ররেখা তৈরি করে। মেসোপটেমীয় সভ্যতায় এই লাল চাঁদকে রাজার জন্য অশুভ সংকেত হিসেবে দেখা হতো।
চন্দ্রগ্রহণ একটি অসাধারণ মহাজাগতিক ঘটনা, যা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির এক দারুণ উদাহরণ। এটি আমাদের বিশ্বজগতের গভীরতা সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানতে সাহায্য করে। এই ধরনের ঘটনাগুলো আমাদের কৌতূহলকে আরও বাড়িয়ে তোলে এবং মহাকাশ সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস