যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগের মধ্যে, ইউটাহ অঙ্গরাজ্য অ্যাপ স্টোরগুলিতে ব্যবহারকারীর বয়স যাচাই এবং নাবালকদের অ্যাপ ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সম্মতি বাধ্যতামূলক করে আইন প্রণয়নকারী প্রথম রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
বুধবার (২৭শে মার্চ) এই বিষয়ক একটি বিল অনুমোদন লাভ করে, যা এখন রাজ্যপাল স্পেন্সার কক্সের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে।
এই আইনটি কার্যকর হলে, শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আরও বেশি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ তৈরি হবে।
আইনটি মূলত মেটা (ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান), অ্যাপল এবং গুগলের মতো বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিতর্কের মূল বিষয় হল, ব্যবহারকারীর বয়স যাচাইয়ের দায়িত্ব কার—অ্যাপ স্টোর নাকি সামাজিক মাধ্যম?
মেটা চাইছে, অ্যাপ স্টোরগুলো এই কাজটি করুক।
তাদের যুক্তি, এর ফলে বাবা-মায়েরা সহজেই তাদের সন্তানের জন্য অ্যাপ ডাউনলোড অনুমোদন করতে পারবেন।
অন্যদিকে, অ্যাপল ও গুগলের মতে, এই কাজটি অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য বেশি উপযোগী।
আইন অনুযায়ী, অ্যাপ স্টোরগুলোতে অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ব্যবহারকারীর বয়স জানতে চাওয়া হবে।
যদি কোনো নাবালক অ্যাকাউন্ট খুলতে চায়, তাহলে তার অভিভাবকের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে এবং পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য আইডি-র প্রমাণ দিতে হতে পারে।
এছাড়া, যে সমস্ত অ্যাপে ইন-অ্যাপ-পার্চেজ বা শর্তাবলীতে সম্মতি দেওয়ার প্রয়োজন হবে, সেগুলো ডাউনলোড করার আগে অভিভাবকদের অনুমোদন লাগবে।
এই আইনের পক্ষে সমর্থনকারীরা বলছেন, এর ফলে শিশুদের অনলাইনে ক্ষতিকর কনটেন্ট থেকে বাঁচানো যাবে।
ইউটাহ-এর এক মা, মেলিসা ম্যাককে জানান, ২০১৭ সালে তার এক ভাগ্নে স্কুলে অন্য শিক্ষার্থীর ডিভাইসে আপত্তিকর কন্টেন্ট দেখেছিলো।
তার মতে, অ্যাপগুলোর ভুল বয়স নির্ধারণ এবং দুর্বল প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অনলাইন ক্ষতির মূল কারণ।
এই বিলের সমালোচকরা বলছেন, এটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর হস্তক্ষেপ করবে।
তাদের মতে, অ্যাপ স্টোরগুলোকে বয়স যাচাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে গিয়ে ব্যবহারকারীদের সংবেদনশীল তথ্য, যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা ক্রেডিট কার্ডের মতো তথ্য দিতে বাধ্য করা হবে, যা অনেকের জন্য অসুবিধাজনক হতে পারে।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত আটটি রাজ্যে এই ধরনের আইন প্রণয়নের প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে।
যদি ইউটাহ-র রাজ্যপাল এই বিলে স্বাক্ষর করেন, তাহলে এর অধিকাংশ ধারা আগামী ৭ই মে থেকে কার্যকর হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন