ডিওয়াইন ওয়েড, যিনি বাস্কেটবল বিশ্বে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, সম্প্রতি তাঁর কিডনি ক্যান্সারের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি মানুষকে, বিশেষ করে পুরুষদের, স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর এই সাহসী পদক্ষেপ আমাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে আনে।
ওয়েডের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই যাত্রা শুরু হয়েছিল তাঁর বাবার প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়ার পর। এরপর তাঁর পরিবারের আরও একজনের, তাঁর দাদারও একই ক্যান্সার হয়। পরিবারে ক্যান্সারের এই ইতিহাস জানার পর, ওয়েড তাঁর শরীরে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন। তিনি পেটে ব্যথা এবং প্রস্রাবের সমস্যা অনুভব করছিলেন। এরপর তিনি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা করানোর পর, ওয়েডের কিডনিতে একটি টিউমার ধরা পরে। ক্যান্সার হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। এই সময়টা তাঁর জন্য ছিল ভীতির। তিনি বলেন, “তখন আমার ভয় লাগতে শুরু করে। আমি বুঝতে পারি, এটা বেশ গুরুতর। আমি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ি।”
৪১ বছর বয়সে, বাস্কেটবলের এই কিংবদন্তীর কাছে আসে সেই দুঃসংবাদ—তাঁর কিডনি ক্যান্সার হয়েছে। তবে সৌভাগ্যবশত, তিনি প্রথম পর্যায়েই রোগটি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায় ধরা পড়ার কারণ ছিল তাঁর সচেতনতা এবং দ্রুত পদক্ষেপ।
মেয়ো ক্লিনিকের মতে, কিডনি ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ হলো: প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া, যা গোলাপী, লাল বা কোলা রঙের হতে পারে; ক্ষুধা কমে যাওয়া; কোমর বা পাশে অবিরাম ব্যথা; দুর্বলতা এবং ওজন হ্রাস।
ওয়েড তাঁর এই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমি চাই, আমার এই অভিজ্ঞতা অন্যদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা অনেকেই, বিশেষ করে পুরুষেরা, নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করি। কিন্তু স্বাস্থ্য বিষয়ক উদ্বেগের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াটা জরুরি।
তিনি বিশেষভাবে পরিবারের স্বাস্থ্য ইতিহাস জানার ওপর গুরুত্ব দেন এবং প্রয়োজনে দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। ওয়েড বলেন, “আসুন, আমরা সবাই একটি দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন যাপনের জন্য সচেতন হই। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে আমাদের শরীরের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করি এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো করাই।
বর্তমানে, ওয়েড ক্যান্সারমুক্ত এবং তিনি তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আগের চেয়ে অনেক বেশি উপভোগ করছেন। তিনি বলেন, “আমি নিজেকে ভাগ্যবানদের একজন মনে করি।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা এবং রোগ সম্পর্কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্ব আমাদের দেশেও অনেক। আমাদের সবার উচিত, স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে অনেক রোগ প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করা সম্ভব, যা চিকিৎসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন