মেক্সিকো সিটিতে ষাঁড়ের লড়াইয়ে অস্ত্র ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা, পশু অধিকার কর্মীদের জয়।
মেক্সিকো সিটি কর্তৃপক্ষ ষাঁড়ের লড়াইয়ে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ঐতিহ্যবাহী এই লড়াইয়ে ষাঁড় এবং ষাঁড়-যোদ্ধা উভয়েরই আঘাতের সম্ভাবনা হ্রাস পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার মেক্সিকো সিটির স্থানীয় কংগ্রেসে এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাশ হয়, যা পশু অধিকার কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন জুগিয়েছে। তবে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা এই খেলার অনুরাগী এবং সমর্থকদের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, ষাঁড়ের লড়াইয়ে এখন থেকে ষাঁড়-যোদ্ধারা কোনো প্রকারের তরবারি বা কোদাল ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়াও, ষাঁড়ের শিং ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে মানুষের আঘাত লাগার সম্ভাবনা কমে যায়।
ক্লারা ব্রুগাদা, যিনি ক্ষমতাসীন মোরেনা পার্টির মেয়র, এই বিলটি উত্থাপন করেন এবং ৬১ ভোটের সমর্থনে এটি পাশ হয়, যেখানে বিপক্ষে ভোট পড়েছিল মাত্র একটি।
কংগ্রেস ভবনের বাইরে, এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন বহু ষাঁড়ের লড়াইয়ের দর্শক ও সমর্থক। তাদের মধ্যে কয়েক জন নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন, এবং পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
বিক্ষোভকারীরা তাদের হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে ষাঁড়ের প্রতি তাদের সম্মান প্রদর্শিত হয়েছে।
সম্প্রতি, প্রতিবেশী রাজ্য টলাক্সক্যালায় ১ মার্চ তারিখে এক ষাঁড়-যোদ্ধা, এমিলিও মাসিয়াস, ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গুরুতর আহত হন। এই ঘটনার পরে, নতুন আইনের প্রয়োজনীয়তা আরও জোরালোভাবে অনুভূত হয়।
আইনপ্রণেতা ভিক্টর হুগো রোমো দে ভিভার জানিয়েছেন, “আমাদের লক্ষ্য ষাঁড়ের লড়াই বন্ধ করা নয়, বরং এটিকে আরও মানবিক করে তোলা।”
মেয়র ব্রুগাদা এই বিল পাসের পর এক বিবৃতিতে জানান, এই পদক্ষেপ মেক্সিকো সিটিকে পশু অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি শহরে পরিণত করবে। তিনি আরও বলেন, “এখানে পশুদের ওপর কোনো প্রকার অত্যাচার বা সহিংসতা সহ্য করা হবে না।”
আইনটি কার্যকর হতে প্রায় ২১০ দিন সময় লাগবে, যার মধ্যে সরকার ষাঁড়ের লড়াইয়ের জন্য নতুন নিয়ম তৈরি করবে।
উল্লেখ্য, মেক্সিকো সিটিতে বিশ্বের বৃহত্তম ষাঁড়ের লড়াইয়ের স্থান রয়েছে, যা স্পেনের চেয়েও বড়। ষাঁড়ের লড়াইয়ের এই ঐতিহ্য মেক্সিকোতে ১৫২৯ সাল থেকে চলে আসছে।
এছাড়া, কলম্বিয়া সরকারও ২০২৭ সালের মধ্যে ষাঁড়ের লড়াই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন