কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্ক কার্নির আগমন, আসন্ন নির্বাচনে পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
কানাডার রাজনীতিতে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হলো আসন্ন সাধারণ নির্বাচন। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্ক কার্নি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এই নির্বাচনের দিকে সকলের দৃষ্টি। আগামী ২৮শে এপ্রিল সম্ভাব্য নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে, এমনটাই জানা যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্নি অটোয়ার নেপিয়ান নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর গত ৯ই মার্চ লিবারেল পার্টি কার্নিকে তাদের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে। এরপর ১৪ই মার্চ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডার ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ট্রুডো জানুয়ারিতে পদত্যাগ করলেও, কার্নি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় ছিলেন।
কার্নি মনে করেন, এই সংকটকালে দেশের জন্য একটি শক্তিশালী ও সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্যনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এবারের নির্বাচনের প্রধান বিষয় হতে পারে। ট্রাম্প এর আগে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোরও প্রস্তাব করেছিলেন। এমনকি কানাডার ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।
অতীতে কানাডার নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি প্রধান্য পেত, যেমন খাদ্য ও আবাসনের মূল্যবৃদ্ধি, এবং অভিবাসন সংক্রান্ত নীতি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ এবং তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে নির্বাচনটি যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সম্পর্ক কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে।
এর ফলে, দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা লিবারেল পার্টির জনসমর্থনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
অন্যদিকে, বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পোলিএভরের সঙ্গে কার্নির মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। ট্রাম্পের নীতির কারণে কনজারভেটিভ পার্টি নির্বাচনে ভালো করার সুযোগ হারাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্ক কার্নি এর আগে ব্যাংক অফ কানাডার প্রধান এবং ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তাঁর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল।
নির্বাচনে কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সের ৩৪৩টি আসনের জন্য ভোট গ্রহণ করা হবে। যে দল এককভাবে অথবা অন্য দলের সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, তারাই সরকার গঠন করবে এবং তাদের নেতা প্রধানমন্ত্রী হবেন। নির্বাচনের ফল কি হয়, সেদিকেই এখন সবার নজর।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান