বিখ্যাত ফরাসি অভিনেতা জেরার্ড ডেপার্ডিউ-এর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের শুনানি শুরু হয়েছে প্যারিসের একটি আদালতে। সোমবার এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়, যেখানে ২০১৬ সাল থেকে চলা #MeToo আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ফরাসি সমাজে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি বিশেষভাবে উঠে এসেছে।
৭৬ বছর বয়সী ডেপার্ডিউয়ের বিরুদ্ধে সিনেমার শুটিং সেটে দুই নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২১ সালে ‘লে ভলেট ভার্টস’ (Les Volets Verts) সিনেমার শুটিং চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগকারীদের গোপন রাখা হয়েছে, তবে জানা গেছে, ডেপার্ডিউ তাদের একজনের শরীরের বিভিন্ন অংশে স্পর্শ করেন এবং অশ্লীল মন্তব্য করেন। ঘটনার সময় সেটে উপস্থিত ছিলেন আরও তিনজন।
ডেপার্ডিউয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগও আনা হয়েছে, যা সিনেমার সেট এবং বাইরের রাস্তায় সংঘটিত হয়।
আদালতে শুনানির শুরুতে ডেপার্ডিউয়ের আইনজীবী জেরেমিয়ে আসুস জানান, তার মক্কেল শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। অভিযুক্ত অভিনেতা আদালতে কোনো কথা না বলে আইনজীবীর সঙ্গে বিচারকের আসনে বসেন।
আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ডেপার্ডিউকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৭৫,০০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা) জরিমানা হতে পারে।
মামলার শুনানির আগে এক নারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেল ডেপার্ডিউয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, “এখানে একটা ভয় কাজ করে, কারণ তিনি সিনেমার একজন বড় তারকা।
এটা অনেকটা ডেভিডের সঙ্গে গোলিয়াথের লড়াইয়ের মতো, যেখানে তারা (অভিযোগকারী) প্রতিশোধের শিকার হওয়ার ভয়ে আছেন, কারণ তারা সবাই সিনেমাতেই কাজ করেন, তবে ডেপার্ডিউয়ের মতো এত প্রভাবশালী নন।
শুনানিটি প্রথমে অক্টোবর মাসে হওয়ার কথা ছিল, তবে ডেপার্ডিউয়ের অসুস্থতার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এই মামলাটি ফ্রান্সে #MeToo আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তথ্য সূত্র: The Guardian