মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ছোট্ট এলাকা, যা কানাডার উপর নির্ভরশীল, সেই অঞ্চলের মানুষজন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে কঠিন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের একেবারে উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত ‘পয়েন্ট রবার্টস’ নামের এই জনপদটি কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হলেও এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি কোনো সংযোগ নেই।
স্থলপথে এখানে যেতে হলে কানাডার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে তৈরি হওয়া উত্তেজনার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
পয়েন্ট রবার্টস-এর মানুষজন মূলত কানাডার উপর নির্ভরশীল। এখানকার অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, এমনকি দৈনন্দিন জীবনও কানাডার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতির কারণে কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে এখানকার বাসিন্দাদের উপর। কানাডিয়ান পর্যটকদের আনাগোনা কমে যাওয়ায় সেখানকার দোকান, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা দেখা দিয়েছে।
পয়েন্ট রবার্টস-এর বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ী তাম্রা হ্যানসেন জানান, তাঁর দুটি রেস্টুরেন্ট প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি বলেন, “কানাডার সমর্থন ছাড়া এই শহরের টিকে থাকা কঠিন।”
সেখানকার অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর প্রধান ক্রিস্টোফার কার্লেটন মনে করেন, রাজনীতিবিদরা তাঁদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে অবগত নন। তাই তাঁদের জীবনযাত্রায় যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যেকার এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলস্বরূপ সেখানকার বাসিন্দারা তাঁদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন অনুভব করছেন। অনেক আমেরিকান নাগরিক তাঁদের জাতীয়তা নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং শুল্ক সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন প্রায়ই পরিবর্তন হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
পয়েন্ট রবার্টস-এর মেয়র ব্রায়ান ক্যাল্ডার জানান, পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তাহলে কানাডা জল ও বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। স্থানীয়রা মনে করেন, তাঁদের এলাকার এই দুর্দশার জন্য ট্রাম্পের নীতিই দায়ী।
তাঁদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে তাঁদের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
পয়েন্ট রবার্টসের বাসিন্দারা তাঁদের এই সংকটকালে ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এবং ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রধানের সাহায্য চেয়েছেন। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাঁরা তেমন কোনো সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
বর্তমানে, পয়েন্ট রবার্টসের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেখানকার অনেক ব্যবসায়ী লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন।
যেমন, সেখানকার একটি মদের দোকানের মালিক ল্যারি মুসেলহোয়াইট জানিয়েছেন, গত মাসে তাঁর দোকানের বিক্রি ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস