একটি সাদা রাজহাঁস, উত্তরের বরফ-ঢাকা প্রান্তরে তার গান শোনাচ্ছে—ইতালীয় কবি জিওভানি পাওলোর “দ্য স্টপওভার” এমনই এক কল্পনাবাদী কবিতার জগৎ।
তাইজে সিলভারম্যান এবং মারিনা দেলা পুত্তা জনস্টন-এর অনুবাদে এই কবিতাটি যেন আরও নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। “দ্য গার্ডিয়ান”-এ প্রকাশিত এই কবিতা বিশ্লেষণের মূল সুর হলো, প্রকৃতির গভীরতা এবং মানুষের অনুভূতির এক অসাধারণ মিশ্রণ।
পাওলো, যিনি ১৮৫৫ সালে ইতালির সান মাউরো দি রোমানিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন, তাঁর শৈশব কেটেছিল প্রকৃতির কাছাকাছি। বাবার অকাল মৃত্যুসহ ব্যক্তিগত কিছু ট্র্যাজেডির কারণে তাঁর জীবন নানাভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।
এই শোক আর প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসাই তাঁর কবিতায় এক বিশেষ স্থান করে নেয়। “দ্য স্টপওভার”-এ, আমরা দেখি, প্রকৃতির ছবিগুলো কীভাবে কবির অনুভূতি আর অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিশে গেছে।
কবিতার শুরুতে একটি রাজহাঁসের গান যেন এক অচেনা জগৎ সৃষ্টি করে। বরফের বিশাল প্রান্তরে, সাদা রাজহাঁসের ডাক আর আকাশের আলো—যেন এক সুরের খেলা।
অনুবাদকরা এই দৃশ্যের গভীরতা এতটাই ফুটিয়ে তুলেছেন যে, মূল ইতালীয় কবিতার মতোই এটি পাঠকের মনে দাগ কাটে। এখানে, আর্কটিক অঞ্চলের প্রকৃতির বর্ণনা, যা বাংলাদেশের মানুষের কাছে হয়তো পরিচিত নয়, তা-ও অত্যন্ত সুন্দরভাবে চিত্রিত হয়েছে।
কবিতাটিতে কেবল প্রকৃতির বর্ণনা নয়, এর সঙ্গে মিশে আছে যুদ্ধের একটি প্রেক্ষাপটও। প্রথম ইতালীয়-ইথিওপীয় যুদ্ধের (১৮৯৫-১৮৯৬) সময়কার কিছু ঘটনা এখানে প্রতীকীভাবে এসেছে।
এর মাধ্যমে কবি মানুষের কষ্ট এবং প্রকৃতির পরিবর্তনের মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছেন।
“দ্য স্টপওভার”-এর অনুবাদ, ভাষার সৌন্দর্য এবং গভীরতা বজায় রেখে কবিতাটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। অনুবাদকেরা মূল কবিতার ছন্দ এবং ভাব অক্ষুণ্ণ রেখেছেন, যা পাঠকদের জন্য একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা।
সবশেষে, “দ্য স্টপওভার” একটি অসাধারণ কবিতা, যা প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের অনুভূতি এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের এক চমৎকার মিশ্রণ। এই কবিতা আমাদের প্রকৃতির গভীরতা এবং জীবনের নানা রূপ সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান