শিরোনাম: মার্কিন সামরিক তথ্য ফাঁস: প্রতিরক্ষা সচিবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, জড়িত শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা
ওয়াশিংটন ডিসি, [তারিখ]- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান, সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স (প্রতিরক্ষা সচিব) পিট হেগসেথের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি সম্ভবত একটি অনিরাপদ মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে (Signal) গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য শেয়ার করেছেন।
এই ঘটনায় এখন দেশের শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) পরিচালক জন র্যাটক্লিফ এবং ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক তুলসি গ্যাববার্ড।
এই ঘটনার জেরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর কার্যক্রম এবং গোপনীয়তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, হেগসেথ সম্ভবত ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য, যেমন লক্ষ্যবস্তু, ব্যবহৃত অস্ত্র এবং আক্রমণের সময়সূচী, একটি গ্রুপ চ্যাটে প্রেরণ করেছিলেন।
এই চ্যাটে একজন সাংবাদিকও যুক্ত ছিলেন। এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পরেই এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানিতে কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শুনানিতে যখন কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে ওই চ্যাটে শেয়ার করা তথ্যগুলো শ্রেণীবদ্ধ ছিল কিনা, তখন সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ এবং ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক তুলসি গ্যাববার্ড দুজনেই প্রতিরক্ষা সচিবের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন।
তাদের বক্তব্য ছিল, প্রতিরক্ষা সচিবই এই ধরনের তথ্য শ্রেণীবদ্ধ করার মূল নিয়ন্ত্রক। র্যাটক্লিফ স্পষ্টভাবে জানান, “যেহেতু প্রতিরক্ষা সচিবই শ্রেণীবদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন, তাই আমি মনে করি, তিনিই বলতে পারবেন তথ্যগুলো গোপনীয় ছিল কিনা।”
তবে হেগসেথ টেক্সট বার্তার মাধ্যমে যুদ্ধ পরিকল্পনার মতো কোনো তথ্য আদান-প্রদান করেননি বলে দাবি করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যুদ্ধ পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো টেক্সট আদান-প্রদান করিনি, এবং আমার বলার মতো আর কিছু নেই।”
অন্যদিকে, তুলসি গ্যাববার্ড এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি জানান, একটি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পর্যালোচনা চলছে, তাই এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।
তবে তিনি স্বীকার করেন, ওই গ্রুপে “লক্ষ্যবস্তুগুলো নিয়ে সাধারণভাবে আলোচনা” হয়েছিল।
এই ঘটনার জেরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গোপনীয়তা এবং ডেটা সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা বলছেন, সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদানের জন্য একটি অনিরাপদ মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়।
এই ঘটনায় মার্কিন সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার অভাবও বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে।
বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এর আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন