হ্যারি আফ্রিকার দাতব্য সংস্থা থেকে সরে দাঁড়ালেন, বিতর্কের জেরে।
যুক্তরাজ্যের প্রিন্স হ্যারি, যিনি ডিউক অফ সাসেক্স হিসেবেও পরিচিত, তার প্রতিষ্ঠিত একটি আফ্রিকান দাতব্য সংস্থা থেকে পদত্যাগ করেছেন। ২০০৬ সালে তিনি এই সংস্থাটি তৈরি করেছিলেন। লেসোথোর প্রিন্স সিইসোও এই সংস্থা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। জানা গেছে, সংস্থার অভ্যন্তরে মতবিরোধ এবং অভিযোগের জের ধরেই এই সিদ্ধান্ত।
সংস্থা সূত্রে খবর, ট্রাস্টিদের সঙ্গে চেয়ার, ড. সোফি চান্দাউকার বিরোধের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ড. চান্দাউকাকে ২০২৩ সালে চেয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। দ্য টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফ্রিকার জন্য তহবিল সংগ্রহের কৌশল নিয়ে এই বিরোধের সূত্রপাত হয়।
হ্যারি এবং সিইসো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, “ট্রাস্টিরা সংস্থার স্বার্থে চেয়ারকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন। আমরা বিশ্বাস করি, তারা কর্মীদের কল্যাণকে সবসময় গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা গভীরভাবে মর্মাহত যে এমনটা ঘটল।” তারা আরও জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে চ্যারিটি কমিশনকে অবগত করবেন।
২০২১ সালে ডিউক অফ সাসেক্স রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পরে, তিনি যে সামান্য কয়েকটি পৃষ্ঠপোষকতার পদ রেখেছিলেন, তার মধ্যে এই সংস্থাটি ছিল অন্যতম।
‘সেনটেবালি’র অর্থ হলো ‘আমাকে ভুলে যেও না’। লেসোথো এবং বতসোয়ানার দরিদ্র ও এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত মানুষের সাহায্যার্থে এই সংস্থাটি তৈরি করা হয়েছিল।
সংস্থাটির প্রাক্তন ট্রাস্টি টিমোথি বাউচার, মার্ক ডায়ার, অড্রে কোসিডিনসি, কেলিলো লেরথোলি এবং ডেমিয়ান ওয়েস্ট এক বিবৃতিতে তাদের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তারা বলেন, “বোর্ডের চেয়ারের প্রতি আস্থা হারানোর ফলস্বরূপ আমাদের এই সিদ্ধান্ত, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।”
অন্যদিকে, সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, দুই রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকের পদত্যাগপত্র তারা পাননি। মুখপাত্র আরও যোগ করেন, “আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আগামী ২৫শে মার্চ, ২০২৫-এ আমাদের বোর্ডের পুনর্গঠন করা হবে। এর মাধ্যমে, সেনটেবালের রূপান্তরকে আরও ত্বরান্বিত করতে সক্ষম এমন বিশেষজ্ঞ এবং নেটওয়ার্ক যুক্ত করা হবে।”
ড. সোফি চান্দাউকা এই বিষয়ে বলেন, “সংস্থাটির অখণ্ডতা, এর লক্ষ্য এবং আমরা যাদের সেবা করি, সেই তরুণদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আমি সবসময় কাজ করি। আমার কার্যক্রম ন্যায়বিচার এবং সকলের প্রতি সম আচরণের নীতির দ্বারা পরিচালিত হয়, যা সামাজিক মর্যাদা বা আর্থিক অবস্থার ঊর্ধ্বে।”
তিনি আরও বলেন, “কিছু লোক আছে যারা আইনের ঊর্ধ্বে নিজেদের স্থান মনে করে এবং অন্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। পরে তারা ভিকটিম কার্ড খেলে এবং যারা তাদের খারাপ কাজের সমালোচনা করে, তাদের ক্ষতি করতে একই গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চ্যারিটি কমিশন জানায়, তারা সেনটেবালের পরিচালনা সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে অবগত আছে। কমিশন জানিয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান