যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে গঠিত ভোক্তা সুরক্ষা ব্যুরো বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টা বর্তমানে স্থগিত করেছে।
ফেডারেল বিচারক অ্যামি বারম্যান জ্যাকসন এই বিষয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, যার ফলে ব্যুরোটিকে এখনই ভেঙে দেওয়া যাচ্ছে না। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে।
আদালতের এই সিদ্ধান্তটি তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি এমন একটি সময়ে এসেছে যখন ট্রাম্প প্রশাসন এই সংস্থাটিকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছিল।
ভোক্তাদের আর্থিক অধিকার রক্ষার জন্য ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পরে এই ব্যুরোটি গঠন করা হয়েছিল। এর প্রধান কাজ ছিল আর্থিক প্রতারণা ও ভুল তথ্য থেকে গ্রাহকদের রক্ষা করা। এই সংস্থা ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম নিরীক্ষণ করে এবং ছাত্র ঋণ গ্রহীতাদের সহায়তা করে থাকে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন এই ব্যুরোটিকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছিল।
এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং বিভিন্ন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে, ফেডারেল বিচারক জ্যাকসন বলেছেন, আদালতের হস্তক্ষেপের অভাবে সংস্থাটি হয়তো বন্ধ হয়ে যেত।
বিচারক বলেছেন, “আদালত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আদালতের নির্দেশ না থাকলে ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত দ্রুত এই সংস্থাটি বন্ধ করে দিত।
আদালতের এই রায়ের ফলে, এখন এই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ব্যুরো তার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী দীপক গুপ্তা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে “সংস্থাটিকে ভেঙে দেওয়ার নজিরবিহীন পরিকল্পনা” প্রতিহত করা গেছে।
সংস্থাটির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে ছিল কর্মী ছাঁটাই এবং কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া।
এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ট্রেজারি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (National Treasury Employees Union), যারা ব্যুরোর কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে, তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল।
এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি দুঃখজনক ঘটনাও ঘটেছে।
ইভা স্টিজ নামের ৮৩ বছর বয়সী এক নারী, যিনি ছাত্র ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যুরোর সঙ্গে কাজ করছিলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার আগেই মারা যান।
বিচারক তাঁর বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, “স্টিজের পরিবারের সদস্যদের ছাত্র ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা ১৫ মার্চ তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পূরণ হয়নি।
সংস্থাটি বন্ধ হয়ে গেলে ভোক্তাদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতি হতো।
এমন পরিস্থিতিতে আদালতের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
এটি গ্রাহকদের আর্থিক সুরক্ষার বিষয়টি আরও একবার নিশ্চিত করলো।
তথ্য সূত্র: Associated Press