**মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়েছে, আন্তর্জাতিক সাহায্যের ঘোষণা**
মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এক হাজারের বেশি হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া জীবিতদের উদ্ধারে এখনো চেষ্টা চলছে।
শনিবার দুপুরের দিকে দেশটির মধ্যাঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কিছু সময় পরেই ৬.৭ মাত্রার একটি আফটারশক অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পের কারণে মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সামরিক জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১,০০২ জন নিহত এবং ২,৩৭৬ জন আহত হয়েছে। হতাহতের বেশিরভাগই মান্দালয়ের বাসিন্দা।
কর্তৃপক্ষের মতে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ব্যাংকক শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে এখন পর্যন্ত ৬ জন নিহত, ২৬ জন আহত এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছে।
এদের মধ্যে অধিকাংশই রাজধানী ব্যাংককের কাছে চাতুচাক মার্কেটের কাছে একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। ভূমিকম্পের কারণে ভবনটি ধসে পড়েছিল।
মিয়ানমারে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ চিত্র এখনো পাওয়া যায়নি। দেশটির সামরিক শাসনের কারণে প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে বেগ পেতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি গত এক শতাব্দীর মধ্যে মিয়ানমারে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল। ভূমিকম্পের কম্পন এতটাই তীব্র ছিল যে, প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককেও বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য থাইল্যান্ডের উদ্ধারকর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন। জানা গেছে, ভূমিকম্পের কারণে নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা ভবন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ধসে পড়ে।
ব্যাংকক সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ভবনের নিরাপত্তা নিরীক্ষণের জন্য ১০০ জনের বেশি প্রকৌশলী নিয়োগ করবে।
ভূমিকম্পের কারণে মিয়ানমারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে। সেখানকার হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি হোটেলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানা গেছে, ভূমিকম্পের সময় মান্দালয়ের একটি হাসপাতালে রোগীদের খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দিতে হয়েছে।
সেখানকার একজন কর্মকর্তা এই পরিস্থিতিকে “গণ হতাহতের এলাকা” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। মানবিক সহায়তা হিসেবে চীন, রাশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া এবং জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে।
চীন, মিয়ানমারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান