যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও টর্নেডোর তাণ্ডবের রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। এতে অঞ্চলটিতে দেখা দিয়েছে মারাত্মক বন্যার আশঙ্কা, যা জীবনহানির কারণ হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা একে ‘বিপর্যয়কর’ বন্যা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। দেশটির টেনেসি, মিসৌরি, ইন্ডিয়ানা এবং কেনটাকিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
গত কয়েকদিনে টর্নেডোর আঘাতে এরই মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেনেসি অঙ্গরাজ্য।
সেখানের সেলমার শহরে টর্নেডোতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া, ন্যাসভিলে শহরে প্রবল বৃষ্টিতে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করতে হয়েছে।
সেখানে একটি আধা-ডুবে যাওয়া গাড়ি থেকে একজন চালককে উদ্ধার করা হয়।
বৃষ্টির কারণে মিসিসিপি উপত্যকা, ওহাইও ভ্যালি এবং মিড-সাউথে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আর্কানসাস, লুইসিয়ানা এবং টেক্সাস অঞ্চলে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি হতে পারে।
কোনো কোনো অঞ্চলে গত ২৫ থেকে ১০০০ বছরের মধ্যে এমন বৃষ্টি হয়নি বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
টর্নেডোর পর উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম এখনো চলছে। এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফেডারেল ও স্থানীয় সংস্থাগুলো জরুরি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে।
এছাড়া, বন্যার্তদের উদ্ধার করতে বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে।
টেনেসি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর বিল লি সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ক্ষতি অনেক হয়েছে, অনেক মানুষ মারা গেছে। রাজ্যের পরিস্থিতি খুবই খারাপ, তবে এই দুর্যোগ এখনো চলছে।’
রাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার পরিচালক প্যাট্রিক শিনান জানিয়েছেন, শুধু টেনেসি রাজ্যেই মৃতের সংখ্যা পাঁচের বেশি।
এছাড়া, বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৪,০০০ গ্রাহক অন্ধকারে রয়েছেন।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন অতিবৃষ্টি হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ শহরে বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে।
কেনটাকি রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এখানে আগে কখনো এমন বৃষ্টি হয়নি এবং রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হতে পারে।
বন্যার কারণে অন্তত ২৫টি মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
বর্তমানে জরুরি বিভাগের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন