সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনাগুলোতে প্রায়ই একটি নতুন বিষয় শোনা যাচ্ছে—মুখ টেপিং। ঘুমের সময় মুখের বদলে নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে ঠোঁটে টেপ লাগানোর এই পদ্ধতি নিয়ে অনেকের মনেই কৌতূহল রয়েছে। বিশেষ করে যারা ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে শ্বাস নেন, তাদের জন্য এই পদ্ধতি উপকারী হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
আসলে, মুখ টেপিং হলো ঘুমের সময় টেপ দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করা। কারণ, নাক দিয়ে শ্বাস নিলে শরীরের জন্য অনেক উপকার হয়। মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার ফলে দাঁতের ক্ষয়, দাঁত cera এবং ঘুমের ব্যাঘাতসহ নানা সমস্যা হতে পারে। নাক দিয়ে শ্বাস নিলে শরীরের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ বজায় থাকে, যা ঘুমের গুণগত মান বাড়াতে সাহায্য করে।
তবে, মুখ টেপিং সবার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। এই পদ্ধতি চেষ্টা করার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে। যেমন, যাদের শ্বাসকষ্ট বা ঘুমের সময় শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তাদের জন্য এটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এছাড়াও, যাদের নাকের সমস্যা রয়েছে, যেমন—নাক বন্ধ থাকা বা সাইনাসের সমস্যা, তাদের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
একজন ব্যক্তি ঘুমের সময় মুখ টেপিং করার চেষ্টা করেছিলেন এবং তার অভিজ্ঞতা এখানে তুলে ধরা হলো। তিনি জানিয়েছেন, রাতে টেপ লাগানোর পর তা ঘুমের মধ্যে খুলে যাওয়ার কারণে খুব একটা সুবিধা হয়নি। তবে দিনের বেলা কাজ করার সময় তিনি কিছুক্ষণ টেপ ব্যবহার করে নাকের মাধ্যমে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে তিনি কিছুটা স্বস্তি অনুভব করেছেন।
মুখ টেপিংয়ের সম্ভাব্য উপকারিতা এবং ঝুঁকি সম্পর্কে সীমিত গবেষণা রয়েছে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এটি হালকা ঘুমের ব্যাধি (sleep apnea) কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখ টেপিং শুরু করার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্ট বা ঘুমের সমস্যা আছে, তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটা খুবই জরুরি। কারণ, এই পদ্ধতি সবার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, স্বাস্থ্য বিষয়ক যেকোনো নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুখ টেপিংয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়।
মুখ টেপিং নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে এবং আপনার জন্য এটি উপযুক্ত কিনা, তা জানতে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন