আন্তর্জাতিক বাজারে শুল্ক বৃদ্ধির জেরে অস্থিরতা, বাংলাদেশের জন্য কী প্রভাব?
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে বিশাল শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পর বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে, যার আঁচ লাগতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া বাণিজ্য নীতির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারে এই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এই শুল্কের কারণে, বিশেষ করে এশিয়ার বাজারগুলোতে বড় ধরনের পতন হয়েছে।
জাপানের নিক্কেই সূচক ৪ শতাংশের বেশি কমেছে, হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকও ১.৫ শতাংশের মতো হ্রাস পেয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে, যা বাজারকে মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
তাইওয়ানের বাজারও ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থ নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর চেষ্টা করছেন। সোনা এখন পর্যন্ত বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যার কারণে এর দাম বেড়েছে। তবে, শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতা এবং বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা আতঙ্কের কারণে তেলের বাজারেও দরপতন দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কনীতি বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়লে, তার সরাসরি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের বাজারেও।
তবে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য কিছু সুযোগও তৈরি হতে পারে। বিশ্ববাজারে বিনিয়োগের ধারা পরিবর্তনের ফলে, বাংলাদেশের বাজারে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়তে পারে। এছাড়াও, সরকার যদি সময় মতো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা সম্ভব।
শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতা এবং বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে গভীর নজর রাখা প্রয়োজন। দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখতে হলে, সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে এবং বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নীতি গ্রহণ করতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন