মার্কিন পর্যটকদের কি বিশ্বজুড়ে খারাপ অভিজ্ঞতা হচ্ছে? ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে অনেক আমেরিকান এখন বিদেশে ভ্রমণকালে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, তাঁদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হচ্ছে, যেন তাঁরা অবাঞ্ছিত অতিথি।
পর্যটন বিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা জানাচ্ছে, গত কয়েক বছরে ইউরোপ এবং অন্যান্য গন্তব্যে মার্কিন পর্যটকদের ভ্রমণ সংখ্যা কমেছে। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক চাপ এবং আমেরিকার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়াকে দায়ী করছেন অনেকে। বিশেষ করে, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নীতিমালার কারণে আমেরিকার প্রতি বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক আমেরিকান এখন বিদেশে ভ্রমণে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন।
কানাডায় স্কি করতে যাওয়া এক মার্কিন দম্পতির তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানা গেছে। সেখানকার একজন নারী তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। জার্মানির এক নারী পর্যটকের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি জার্মানিতে ভ্রমণের সময় আমেরিকান হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না।
পর্যটকদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে অনেকে তাঁদের পোশাক এবং আচরণের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। ভ্রমণ বিষয়ক ব্লগার রিক স্টিভস-এর মতে, আমেরিকাবাসীদের এখন ভ্রমণের সময় ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (ম্যাগা) টুপি এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, এই টুপি একটি বিশেষ রাজনৈতিক আদর্শের প্রতীক হিসেবে পরিচিত এবং তা অনেক ক্ষেত্রে বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
বিমান সংস্থা ‘সিরিয়াম’-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় গ্রীষ্মকালে মার্কিন শহরগুলো থেকে ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যের ফ্লাইট রিজার্ভেশন কমেছে প্রায় ১২.৬ শতাংশ। এর পেছনে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা একটি বড় কারণ হতে পারে। এছাড়া, ‘ভার্জিন আটলান্টিক’-এর মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারীদের সংখ্যা কমার পেছনেও অর্থনৈতিক চাপ দায়ী।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, বিশ্বায়নের যুগে একটি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলি সেখানকার নাগরিকদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, ভ্রমণের সময় প্রত্যেক নাগরিককে তাঁর দেশের ভাবমূর্তি এবং সেই দেশের প্রতি বিশ্ববাসীর ধারণা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান