মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ আমেরিকান কৃষকদের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের উপর নতুন করে অতিরিক্ত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যদিও তিনি অন্যান্য দেশগুলোর উপর শুল্কের বোঝা কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তবে চীনও বসে নেই। তারাও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন উৎপাদনকারী কৃষকরা, যাদের একটি বড় অংশ ট্রাম্পকে সমর্থন জুগিয়েছিলেন।
**শুল্ক যুদ্ধের ফল: মার্কিন কৃষকদের ক্ষতি**
বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল পরিমাণ কৃষি পণ্য আমদানি করত, যার মধ্যে সয়াবিন ছিল অন্যতম। কিন্তু শুল্ক বৃদ্ধির কারণে এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
চীনের বাজারে মার্কিন সয়াবিনের প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
আগেও যখন দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন ব্রাজিল এর সুবিধা নিয়েছিল। ব্রাজিলিয়ান সয়াবিন রপ্তানিকারকরা চীনের বাজারে তাদের প্রবেশাধিকার আরও বাড়িয়েছিল। এমনকি, ২০১৬ সাল থেকে ব্রাজিলের সয়াবিন রপ্তানি ২৮০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি ছিল স্থিতিশীল।
**চীনের বিকল্প বাজার অনুসন্ধান**
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের জবাব দিতে চীন বিকল্প বাজারের দিকে ঝুঁকছে। তারা ব্রাজিলসহ অন্যান্য দক্ষিণ আমেরিকান দেশ থেকে সয়াবিন আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
এছাড়া, চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন (আসিয়ান) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে তারা বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চাইছে।
এই পরিস্থিতিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, তারা একদিকে যেমন চীনের বাজারে প্রবেশাধিকার হারাচ্ছে, তেমনি বিশ্ববাজারে তাদের পণ্যের চাহিদা কমছে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধ আমেরিকার কৃষি খাতের জন্য প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির কারণ হতে পারে।
**বাংলাদেশের জন্য প্রাসঙ্গিকতা**
যদিও এই বাণিজ্য যুদ্ধ সরাসরিভাবে বাংলাদেশের উপর প্রভাব ফেলছে না, তবে বিশ্ব বাণিজ্য এবং কৃষি পণ্যের বাজারে এর একটি প্রভাব রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির এই ধরনের পরিবর্তনের দিকে নজর রাখা জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন