মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা, পিট হেগসেথ, সম্প্রতি একটি গুরুতর বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। জানা গেছে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে তৈরি করা একটি সিগন্যাল গ্রুপে, যেখানে তার স্ত্রী এবং ভাইও ছিলেন, সেখানে ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার গোপন তথ্য শেয়ার করেছেন। এই ঘটনাটি জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন হেগসেথ, যিনি প্রতিরক্ষা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, মার্চ মাসে ইয়েমেনে হামলার বিস্তারিত পরিকল্পনা ওই মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে আদান-প্রদান করেন। সাধারণত, এ ধরনের স্পর্শকাতর তথ্য আদান-প্রদানের জন্য অনুমোদিত মাধ্যম ব্যবহার করা হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করা হয়, যা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজও একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। তিনি একটি সিগন্যাল গ্রুপ তৈরি করেছিলেন, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আটলান্টিকের প্রধান সম্পাদকও অনিচ্ছাকৃতভাবে যুক্ত হয়েছিলেন। যদিও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনাটিকে ‘ছোটখাটো ত্রুটি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনী অ্যারিজোনায় এক মার্কিন নাগরিককে প্রায় দশ দিন আটক করে রাখে, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ১৯ বছর বয়সী হোসে হারমোসিলো নামের ওই ব্যক্তিকে মেক্সিকো সীমান্ত সংলগ্ন নোগালস শহরে আটক করা হয়। তাঁর এই অন্যায় আটকের ঘটনা অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির প্রেক্ষাপটে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
অন্যদিকে, মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন সম্প্রতি এল সালভাদর সফর করেন। সেখানে তিনি কিলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যিনি বিতর্কিতভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। সিনেটর ভ্যান হোলেন জানান, তিনি অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। যদিও হোয়াইট হাউস দাবি করেছে যে, অ্যাব্রেগো গার্সিয়া এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সদস্য, তবে তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
এছাড়াও, মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের সিনেটর অ্যামি ক্লোবুচার সতর্ক করে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে। তবে আদালত, রিপাবলিকানদের অসন্তোষ এবং জনসাধারণের প্রতিবাদের কারণে সংকট আপাতত এড়ানো যাচ্ছে।
অন্যদিকে, ম্যাসাচুসেটস-এর গভর্নর মাওরা হ্যালি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর ট্রাম্পের সমালোচনার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, এর ফলে গবেষণা খাতে ক্ষতি হচ্ছে এবং আমেরিকান প্রতিযোগিতায় প্রভাব পড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর একটি প্রস্তাবনাও শোনা যাচ্ছে। এই প্রস্তাবনায় আফ্রিকা মহাদেশের কিছু অঞ্চলের কার্যক্রম, জলবায়ু, শরণার্থী, মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং লিঙ্গ সমতা বিষয়ক দপ্তরগুলোতে বড় ধরনের কাটছাঁটের পরিকল্পনা রয়েছে।
অন্যদিকে, পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সম্প্রতি সাক্ষাৎ করেছেন জে ডি ভেন্স। তাঁরা অভিবাসন নীতি এবং অভিবাসীদের বিতাড়ন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান