ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্ক: উদ্বেগের ছায়া।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা অনেকের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
এই পরিস্থিতিতে তাঁর পরিবারের ব্যবসায়িক কাজকর্ম, বিশেষ করে কাতার ও সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কাতার সরকার ট্রাম্পকে একটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান উপহার দিতে চেয়েছিল, যা এয়ার ফোর্স ওয়ানের কাজে ব্যবহারের কথা ছিল। তবে এই প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কারণ বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের কাছ থেকে এমন উপহার নেওয়া কতটা বৈধ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সমালোচকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সময় বিদেশি রাষ্ট্র থেকে পাওয়া উপহার গ্রহণ করা হলে তা স্বার্থের সংঘাত তৈরি করতে পারে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প পরিবারের ব্যবসায়িক কাজকর্মও আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। তাঁর পরিবার বর্তমানে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং কাতারে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও গলফ কোর্স নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
এছাড়াও, ট্রাম্প পরিবারের ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টিও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। একটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক বিনিয়োগ সংস্থা ট্রাম্পের ক্রিপ্টো কোম্পানির মাধ্যমে ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পের এই ধরনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ হতে পারে। তাঁদের মতে, বিদেশি রাষ্ট্রগুলো সম্ভবত ট্রাম্পের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়ার আশায় তাঁর ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে।
ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিস মারফির মতে, ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েছেন এই দেশগুলো থেকে সুবিধা আদায়ের জন্য।
তবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউস মুখপাত্রের দাবি, ট্রাম্প কোনো ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য কাজ করছেন না।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে স্টক বা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টা চলছে।
এই লক্ষ্যে সিনেটর জশ হাওলির নেতৃত্বে একটি বিল আনা হয়েছে, যা নির্বাচিত কর্মকর্তাদের স্টক এবং অন্যান্য বিনিয়োগের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে চায়। যদিও এই আইন ট্রাম্পের ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন। এই ধরনের আলোচনা শুধু একটি দেশের জন্য নয়, বরং গণতান্ত্রিক বিশ্বে রাজনৈতিক নৈতিকতা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন