কামালা হ্যারিসের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক জীবন নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। ২০২৬ সালের ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচনের দিকেই কি তিনি ঝুঁকছেন? সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে।

যদিও তিনি এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি, তবে ঘনিষ্ঠমহলের অনেকেই মনে করছেন, জুলাই মাসের ২১ তারিখের মধ্যে তিনি হয়তো তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনার বিষয়ে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন। কারণ, এই তারিখের পরেই সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর যে নিরাপত্তা পাওয়ার কথা, সেটিও শেষ হয়ে যাবে।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে হ্যারিস এরই মধ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানতে প্রাক্তন ও বর্তমান সহকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন এবং বিভিন্ন প্রবন্ধের লিংক পাঠাচ্ছেন।

লস অ্যাঞ্জেলেসে নিজের বাড়িতে তিনি কিছু ঘরোয়া বৈঠকেরও আয়োজন করেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হলে তাকে সেখানকার আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং রাজ্যের বাজেট ঘাটতি সামলাতে হবে।

এছাড়া, রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যেমন – জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান আবাসনের সংকট, এবং স্থানীয় চলচ্চিত্র শিল্পের অবনতি – এসব দিকেও নজর দিতে হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করাটা হ্যারিসের জন্য সহজ হবে না। কারণ, রাজ্যের বিশাল বাজেট ঘাটতি রয়েছে এবং বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকে মনে করছেন, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা ত্যাগ করে হ্যারিস সম্ভবত ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। কারণ, এতে তিনি নিজের রাজ্যের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পাবেন এবং জাতীয় পর্যায়েও পরিচিতি ধরে রাখতে পারবেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে হ্যারিসকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে হতে পারে।

তবে, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেবে।

বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেটদের মধ্যে হ্যারিসের জনপ্রিয়তা বেশ ভালো। তবে, ইতিমধ্যেই এই পদের জন্য কয়েকজন প্রার্থী তাদের প্রচারণা শুরু করেছেন।

তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন লস অ্যাঞ্জেলেসের সাবেক মেয়র অ্যান্টনিও ভিলারাইগোসা এবং ক্যালিফোর্নিয়ার বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল, যিনি আগে বাইডেন প্রশাসনে স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই জেভিয়ার বেকেরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হ্যারিসের গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের কারণে অন্যান্য প্রার্থীরাও তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে পারেন। যদিও আগামী জুনে এই নির্বাচনের জন্য প্রার্থী ঘোষণার সময় এখনো অনেক বাকি, তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে এরই মধ্যে বেশ তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে।

তথ্য সূত্র: CNN