দক্ষিণ সুদানের শরণার্থীরা: ইথিওপিয়ায় স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা, সতর্কবার্তা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের
যুদ্ধবিধ্বস্ত দক্ষিণ সুদানে নতুন করে সংঘর্ষের জেরে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। উদ্বাস্তু শিবিরে কলেরা ও অপুষ্টির ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় সেখানে বসবাসকারী শরণার্থীদের স্বাস্থ্য নিয়ে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে একটি “স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের” আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (Médecins Sans Frontières)।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ইথিওপিয়ার সীমান্তবর্তী শহর মাত্তারে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের মধ্যে কলেরা দ্রুত ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে এক হাজারের বেশি কলেরা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া, ম্যালেরিয়া এবং অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যাও বাড়ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এখানকার শরণার্থী শিবিরগুলোতে খাবার, জল এবং উপযুক্ত বাসস্থানের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া শিশুদের মধ্যে প্রায় ৭ শতাংশ মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। একইসঙ্গে, ম্যালেরিয়া পরীক্ষার ফলাফলে ৪০ শতাংশের বেশি রোগীর শরীরে এই রোগ ধরা পড়েছে।
যুদ্ধের কারণে আহত হয়ে অনেকে চিকিৎসা নিতে আসছেন, যেখানে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত যুদ্ধাহত অন্তত ২০০ জনের চিকিৎসা করা হয়েছে।
জাতিসংঘও দক্ষিণ সুদানের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, সেখানে “সহিংসতা বাড়ছে, যা ইতোমধ্যে মানবিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ থেকে ২০ মের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৭৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
সংস্থাটি অবিলম্বে সংঘাত বন্ধের জন্য বিবদমান পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের মতে, আশ্রয়শিবিরগুলোতে আশ্রয়, জল এবং চিকিৎসার গুরুতর অভাব রয়েছে।
দক্ষিণ সুদানে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে দেশটির প্রেসিডেন্ট সালভা কির এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিiek মাচারের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এই সংঘাতের কারণে সেখানকার সাধারণ মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে, জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন তারা।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা