শিরোনাম: যুক্তরাজ্যের বৃদ্ধ মহিলার মোবাইল টপ-আপে ১৯০০ পাউন্ডের ক্ষতি, বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য সতর্কবার্তা
সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের একজন ৮৪ বছর বয়সী বৃদ্ধা, মোবাইল টপ-আপ সেবার নামে ১৯০০ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার বেশি) খুইয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ‘অন টপ আপ’ নামক একটি মোবাইল টপ-আপ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। জানা যায়, ওই বৃদ্ধা তার নাতির মাধ্যমে একবার মোবাইল ফোনে ৪০ পাউন্ডের (প্রায় ৫ হাজার ৫০০ টাকা) টপ-আপ করেছিলেন। এরপর, তিনি অজান্তেই এই প্রতিষ্ঠানের মাসিক সাবস্ক্রিপশনে যুক্ত হয়ে যান।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, টপ-আপ করার সময় একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে মাসিক সাবস্ক্রিপশনে যুক্ত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি মাসিক ভাউচার ইস্যু করার বিষয়ে কোনো বিজ্ঞপ্তি পাঠায়নি। এমনকি, ভাউচারগুলো সক্রিয় না করা হলে বা মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও গ্রাহকদের কোনো সতর্কবার্তা পাঠানো হয়নি।
অভিযোগের পরে, প্রথমে কোম্পানিটি এক মাসের রিফান্ড দিতে রাজি হয়। কিন্তু ভুক্তভোগী ঘটনার প্রতিকার চেয়ে চাপ প্রয়োগ করলে, তারা এক বছরের টাকা ফেরত দিতে রাজি হয়। যদিও ক্ষতিগ্রস্থ বৃদ্ধার দাবি ছিল, তার সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাওয়া উচিত।
অন টপ আপ-এর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের এমন অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের ট্রাস্ট পাইলট (Trustpilot)-এর রেটিংয়ে। কোম্পানিটি তাদের পরিষেবাকে ‘সহজ উপায়’ হিসেবে বর্ণনা করে, যা যেকোনো নেটওয়ার্কে মোবাইল রিচার্জ করতে সাহায্য করে। কিন্তু তারা আসলে একটি মধ্যস্থতাকারী, এবং তাদের সেবার জন্য অতিরিক্ত চার্জ করে। উদাহরণস্বরূপ, ৫ পাউন্ডের (প্রায় ৬৯০ টাকা) টপ-আপে তারা ৯৫ পেন্স (প্রায় ১৩০ টাকা) পর্যন্ত অতিরিক্ত চার্জ করে থাকে।
কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রাহক স্বয়ংক্রিয়ভাবে অটো টপ-আপ (auto top-up) সক্রিয় করলেই কেবল এই ধরনের চার্জ প্রযোজ্য হবে। গ্রাহকরা ওয়েবসাইটে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে এই সুবিধা বন্ধ করতে পারেন।
এই ঘটনাটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। বর্তমানে ডিজিটাল পরিষেবার প্রসারের সাথে সাথে, অনলাইনে সাবস্ক্রিপশন এবং অপ্রত্যাশিত চার্জের ঝুঁকি বাড়ছে। বাংলাদেশেও মোবাইল রিচার্জ এবং অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সচেতন থাকা জরুরি। অনেক সময়, আমরা দ্রুততার সাথে কোনো পরিষেবা ব্যবহার করতে গিয়ে শর্তাবলী ভালোভাবে না পড়েই সম্মতি দিয়ে ফেলি, যা অপ্রত্যাশিত ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অতএব, যেকোনো অনলাইন পরিষেবা ব্যবহারের আগে, বিশেষ করে সাবস্ক্রিপশন নেওয়ার সময়, নিয়ম ও শর্তাবলী ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত। এছাড়া, সন্দেহজনক কোনো চার্জ দেখলে দ্রুত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান