নিউজিল্যান্ডে তিন বছর ধরে পলাতক থাকা এক বাবার সঙ্গে নিখোঁজ হওয়া তিন সন্তানের খোঁজে পুনরায় ব্যাপক তল্লাশি শুরু করেছে দেশটির পুলিশ। ঘটনাটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের। টমাস কলাম ফিলিপস নামের ওই ব্যক্তি পারিবারিক কলহের জেরে সন্তানদের নিয়ে আত্মগোপন করেন। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা ওয়াইকাটো অঞ্চলের তে ওয়াইতেরে এবং তে মাইকা এলাকার আশেপাশে কয়েক দিন ধরে চিরুনি অভিযান চালাবে। এই এলাকাগুলো উত্তর দ্বীপের গ্রামীণ জনপদ, যেখানে ফিলিপসকে সবশেষ দেখা গিয়েছিল। ডিটেকটিভ সিনিয়র সার্জেন্ট অ্যান্ডি সন্ডার্স এক বিবৃতিতে জানান, কোনো নির্দিষ্ট সূত্র ধরে নয়, নিয়মিত তদন্তের অংশ হিসেবেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই ফিলিপস পুলিশের চোখ এড়িয়ে চলছেন। সে সময় তার সন্তান এমবার, মাভেরিক ও জায়দার বয়স ছিল যথাক্রমে ৫, ৭ এবং ৮ বছর। প্রথমে পুলিশের ধারণা ছিল, তিনি সরকারি সম্পদ নষ্ট করেছেন। কিন্তু ২০২৩ সালের মে মাসে এক নারী সহযোগীর সহায়তায় ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগ ওঠার পর তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা আরও দীর্ঘ হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন সময়ে তাদের সম্ভাব্য আস্তানায় হেলিকপ্টার ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে, কিন্তু তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২০২৪ সালের অক্টোবরে মারোকোপা অঞ্চলে শূকর শিকারিরা ফিলিপস ও তার সন্তানদের দেখতে পায়। তাদের ভিডিও ধারণ করা হয়, যা ২০১৭ সালের পর সন্তানদের জীবিত থাকার প্রথম প্রমাণ ছিল। সন্তানদের মা ক্যাট দীর্ঘদিন ধরে তাদের ফিরে আসার অপেক্ষা করছেন।
নিউজিল্যান্ডের সাবেক গোয়েন্দা পরিদর্শক এবং সংকট-আলোচনাকারী ল্যান্স বার্ডেট এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘ছোট্ট একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও তাদের খুঁজে না পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক, বিশেষ করে যখন একই এলাকায় তাদের দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে’।
ওতো orোঙ্গা জেলার মেয়র ম্যাক্স ব্যাক্সটারের ধারণা, ফিলিপসকে কেউ সাহায্য করছে। মারোকোপা গ্রামটি এই জেলার অন্তর্ভুক্ত, যেখানে একশ জনেরও কম মানুষের বসবাস। তিনি বলেন, “আমরা নিশ্চিত যে, কিছু মানুষ টমকে সাহায্য করছে। এখনও অনেকে বিশ্বাস করে যে, তিনি তার সন্তানদের জন্য সঠিক কাজটি করছেন।”
ফিলিপসের বেড়ে ওঠা মারোকোপা অঞ্চলে এবং তার বাবা-মা এখনও সেখানে বসবাস করেন। ২০২৩ সালে টিভিএনজেডকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তার মা জানান, তিনি ছেলের অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং তারা চারজনের নিরাপদে ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন