মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থাইল্যান্ডের কিছু কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
চীনের কাছে উইঘুর মুসলিমদের ফেরত পাঠানোর কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, যারা এই বিতাড়নে জড়িত ছিলেন, তাদের ওপর তাৎক্ষণিকভাবে ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।
তবে, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
উইঘুররা চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসকারী প্রায় এক কোটি মুসলিম জনগোষ্ঠীর একটি অংশ।
দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করে আসছে যে, চীন উইঘুরদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালাচ্ছে।
তাদের গণহারে আটক করা হচ্ছে।
যদিও চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, “উইঘুরসহ অন্যান্য গোষ্ঠীকে চীন সরকার জোর করে ফেরত পাঠাতে চাপ সৃষ্টি করছে।
আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করছি।
কারণ, সেখানে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয় এবং তারা গুমের শিকার হয়।”
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, চীন সরকার তাদের আশ্বস্ত করেছে যে, ফেরত পাঠানো উইঘুরদের কোনো ক্ষতি হবে না এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
থাইল্যান্ড সরকার তাদের ভালো থাকার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, “থাইল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে মানবিকতার নীতি অনুসরণ করে আসছে।
বিশেষ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশটি ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে সহায়তা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে।”
থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা আগামী সপ্তাহে চীনের ওই অঞ্চলে পরিদর্শনে যাবেন এবং তাদের সঙ্গে কয়েকজন থাই সাংবাদিকও যোগ দেবেন।
২০১৪ সালে চীন থেকে পালিয়ে আসা তিন শতাধিক উইঘুরকে থাই কর্তৃপক্ষ আটক করে।
এরপর, আন্তর্জাতিক মহল এবং থাই আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতার পরেও, ফেব্রুয়ারিতে তাদের মধ্যে ৪৮ জনকে চীনে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
মার্কো রুবিও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “উইঘুরদের চীনে নির্যাতন, জোরপূর্বক শ্রম এবং নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে।”
চীনের দূতাবাস তাদের ফেসবুক পোস্টে জানায়, ৪০ জন চীনা নাগরিককে একটি বিশেষ ফ্লাইটে জিনজিয়াংয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তাদের চোরাচালান করে আনা হয়েছিল এবং ১০ বছরের বেশি সময় পর তারা পরিবারে ফিরেছেন।
মার্কো রুবিও দীর্ঘদিন ধরেই বেইজিংয়ের সমালোচক।
উইঘুর এবং হংকংয়ের মানুষের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানানোয় ২০২০ সালে চীনের পক্ষ থেকে তার ওপর দুবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা