যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ও তুষারঝড়ের তাণ্ডব, বহু রাজ্যে জরুরি অবস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী একটি ঘূর্ণিঝড়। এর প্রভাবে টর্নেডো, দাবানল, তুষারঝড় এবং তীব্র ঝোড়ো হাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির মিসৌরি, টেক্সাস, ওকলাহোমা সহ বিভিন্ন রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ঝড়ের কারণে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার, মিসৌরিতে বেশ কয়েকটি টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সেন্ট লুই এলাকার একটি উল্লেখযোগ্য। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টেক্সাসের পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ধূলিঝড়ের কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। রাজ্যের জরুরি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দৃশ্যমানতা শূন্যের কাছাকাছি চলে আসায় প্রায় ৪০টি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে ১৩০টির বেশি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তীব্র বাতাসের কারণে ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। জরুরি বিভাগের কর্মীরা কয়েকটি শহরের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শনিবার মিসিসিপি এবং আলাবামাতেও টর্নেডোর আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পূর্বাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (National Weather Service)-এর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে তুষারঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিনেসোটা এবং সাউথ ডাকোটার পশ্চিমাঞ্চলে ভারী তুষারপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৯৭ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর ফলে সেখানে দৃষ্টিসীমা কমে আসবে।
আবহাওয়াবিদ বিল বান্টিং জানিয়েছেন, মার্চ মাসে এমন চরম আবহাওয়া দেখা গেলেও, এবারের ঝড়ের বিস্তৃতি ও তীব্রতা অনেক বেশি।
টেক্সাস, ওকলাহোমা, কানসাস, মিসৌরি এবং নিউ মেক্সিকোর কিছু অংশে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তীব্র বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। টেক্সাসের একটি দাবানল প্রায় ৮৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল, তবে দমকলকর্মীরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় সেটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। টেক্সাস, ওকলাহোমা, আরকানসাস এবং মিসৌরিতে দুই লক্ষাধিক মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।
আবহাওয়ার এই চরম রূপের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।