মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট ‘মার্চ ম্যাডনেস’-এর ব্র্যাকেট আবিষ্কারের কৃতিত্ব কার? এমন একটি কৌতূহলোদ্দীপক প্রশ্ন নিয়ে সম্প্রতি সরগরম হয়ে উঠেছে ক্রীড়া বিশ্ব। এই নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে, কারণ এই ব্র্যাকেট তৈরি নিয়ে দুটি ভিন্ন দাবি উঠেছে।
একটি দাবিদার নিউ ইয়র্কের একটি বার, অন্যজন আবার কেন্টাকি রাজ্যের একজন পোস্টাল কর্মী। আসলে, ‘মার্চ ম্যাডনেস’ হল ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন (NCAA)-এর বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট, যা আমেরিকায় বেশ জনপ্রিয়।
এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি বাজি ধরার পদ্ধতি, যা ‘ব্র্যাকেট’ নামে পরিচিত। ব্র্যাকেটের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন দলের জেতার সম্ভাবনা বিচার করে তাদের পছন্দের তালিকা তৈরি করে।
প্রথম দাবিদার হল নিউ ইয়র্কের স্টেটেন আইল্যান্ড এলাকার ‘জোডিস ক্লাব ফরেস্ট’ নামের একটি বার। বারটির বর্তমান মালিকের ভাষ্য অনুযায়ী, সত্তরের দশকে তাঁর বাবা-মা এই বারে একটি বাজি ধরার প্রতিযোগিতা শুরু করেছিলেন।
যেখানে অংশগ্রহণকারীদের ফাইনাল ফোর দল এবং চ্যাম্পিয়ন দলকে বেছে নিতে হত, এবং সেই অনুযায়ী পুরস্কার দেওয়া হতো। শুরুতে এই প্রতিযোগিতায় দশ ডলারের বিনিময়ে অংশ নেওয়া যেত (যা বর্তমানে প্রায় ১১০০ টাকার সমান)।
সময়ের সাথে সাথে এই বাজি ধরার আকর্ষণ বাড়ে এবং পুরস্কারের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক সময় এই প্রতিযোগিতার জ্যাকপট গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৬ লক্ষ ডলারে (বর্তমান হিসাবে প্রায় ১৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা)।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা (IRS)-এর কিছু জিজ্ঞাসাবাদের কারণে ২০০৬ সালে এই প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে, কেন্টাকির বব স্টিনসন নামের এক পোস্টাল কর্মীও এই ব্র্যাকেট তৈরির দাবিদার।
বব ১৯৭৮ সালে নিজের তৈরি করা একটি ব্র্যাকেট ব্যবহার করে বাজি ধরতেন। তাঁর ছেলে ডেমনের মতে, বাস্কেটবল খেলায় কার দল জিতবে, সেই বিষয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরার মজাই ছিল আসল।
বব হাতে করে ব্র্যাকেট তৈরি করতেন এবং বন্ধুদের মধ্যে তা বিতরণ করতেন। পরে তিনি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ব্র্যাকেটের ডিজিটাল সংস্করণ তৈরি করেন এবং বন্ধুদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠাতেন। ডেমনের দাবি, তাঁর বাবা প্রথম ব্যক্তি যিনি ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ব্র্যাকেট তৈরি করেন।
তবে, কে প্রথম এই ব্র্যাকেটের ধারণা নিয়ে এসেছিলেন, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। ‘জোডিস ক্লাব ফরেস্ট’-এর বর্তমান মালিকও স্বীকার করেছেন, তাঁদের বারের এই কৃতিত্বের তেমন কোনো প্রমাণ নেই।
বাংলাদেশেও বিভিন্ন খেলা নিয়ে বাজি ধরার চল রয়েছে। বিশেষ করে ক্রিকেট বিশ্বকাপ বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টগুলোতে বিভিন্ন দল এবং খেলোয়াড়দের নিয়ে বাজি ধরা হয়।
সেই দিক থেকে দেখলে, ‘মার্চ ম্যাডনেস’-এর ব্র্যাকেটও অনেকটা সেরকমই, যেখানে খেলার ফলাফল নিয়ে আগ্রহীরা তাঁদের অনুমান বাজি ধরে প্রকাশ করেন। তথ্য সূত্র: Associated Press (AP)