বিখ্যাত কমেডিয়ান লরেন প্যাটিসন: মঞ্চ থেকে বাস্তব জীবন, হাসির সফরে
হাসি-ঠাট্টার জগৎ-এ একজন কমেডিয়ানের পথ চলাটা সবসময় মসৃণ হয় না। খ্যাতির আলোয় আসার আগে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়।
তেমনই এক জন হলেন ব্রিটিশ কমেডিয়ান লরেন প্যাটিসন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবন এবং কমেডি জগতে পথচলার নানা দিক তুলে ধরেছেন তিনি।
কমেডিয়ান হিসেবে তাঁর যাত্রাটা খুব সহজ ছিল না। কৈশোরে মঞ্চে উঠতে গিয়ে তীব্র নার্ভাসনেস গ্রাস করত তাঁকে। কিন্তু মানুষকে হাসানোর আনন্দটাই ছিল আসল, আর সেকারণেই হয়তো ধীরে ধীরে এই পেশায় আসা।
লরেন জানান, ১৮ বছর বয়সে তিনি যা ছিলেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সেই লরেনকে তিনি কল্পনাও করতে পারেন না। তাঁর মতে, কমেডি তাঁর জীবনকে নতুন অর্থ দিয়েছে।
শুরুর দিকে লরেন অনুপ্রেরণা হিসেবে রব রাউস এবং রস নোবেলের মতো কমেডিয়ানদের অনুসরণ করতেন। তাঁদের কাজ দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হতেন।
তবে কমেডি জগতে কিছু সমস্যাও রয়েছে, যা লরেনকে হতাশ করে। যেমন, সময় মতো পারিশ্রমিক না পাওয়া, লন্ডনের বাইরে থেকে আসা কমেডিয়ানদের প্রতি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, এবং শিল্পের জগতে শ্রেণি বৈষম্য—এই বিষয়গুলো তিনি বেশ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।
লরেনের নতুন শো ‘বিগ গার্ল প্যান্টস’। এই শো-এর ধারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি যখন বুঝতে পারলাম যে আমি ত্রিশের কোঠায় পা রেখেছি, তখন মনে হল এই বিষয়টাকে উদযাপন করা দরকার। আগের শো-গুলোতে আমি যা পেয়েছি, তা নিয়েই ভালো থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এবার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করছি।”
শো শুরুর আগে নার্ভাসনেস কাটাতে লরেনের কিছু নিজস্ব উপায় আছে। তিনি সবসময় চেষ্টা করেন, মঞ্চে ওঠার আগে তাঁর পোশাক ঠিক আছে কিনা, অথবা দাঁতে কিছু লেগে আছে কিনা, সেসব খুঁটিনাটি বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে।
কমেডি জগতে খারাপ অভিজ্ঞতার কথাও তিনি শেয়ার করেছেন। একবার একটি অনুষ্ঠানে তাঁর পারফর্মেন্স এতটাই খারাপ হয়েছিল যে তিনি পারিশ্রমিক না নিয়েই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার চেষ্টা করেছিলেন। পরে ফেরার পথে তিনি ডেলির মাংস কিনেছিলেন, যা খেয়ে তিনি হতাশায় ডুবে যান।
কমেডি তাঁকে জীবনের কঠিন পরিস্থিতিগুলো হাসিমুখে মোকাবিলা করতে শিখিয়েছে। ব্রিটিশ রেল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখা থেকে শুরু করে অন্য কমেডিয়ানদের সঙ্গে গ্রিন রুমে পোশাক পরিবর্তন করার মতো অভিজ্ঞতাও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে।
লরেনের মতে, কমেডি জগতের অন্যতম সেরা শিল্পী হলেন রাসেল হাওয়ার্ড। রাসেলকে তিনি প্রথমবার ১৫ বছর বয়সে লাইভে দেখেন এবং তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন। বহু বছর পর, লরেন তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে লরেন জানান, তিনি আগস্ট মাসে এডিনবার্গে ফ্রিন্জ উৎসবে থাকতে চান না। কারণ তিনি গত ১১ বছরে মাত্র চারবার এই উৎসবে অনুপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে দু’বার কোভিড পরিস্থিতির কারণে সেখানে যাওয়া হয়নি।
তাই এবার এই ব্যস্ততা থেকে দূরে থাকতে চান তিনি।
লরেন প্যাটিসন বর্তমানে ‘বিগ গার্ল প্যান্টস’ নিয়ে ট্যুরে আছেন এবং আগামী ১০ই জুন পর্যন্ত তাঁর এই শো চলবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান