মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরিত লিঙ্গ) সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা জনসংখ্যার এক শতাংশেরও কম। কিন্তু দেশটির রাজনীতিতে তারা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
সম্প্রতি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে রক্ষণশীল ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন এবং তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছেন। খেলাধুলা ও পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের মতো বিষয়গুলোতে ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের বিরোধিতা করে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। যদিও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা সমাজের একটি ক্ষুদ্র অংশ, কিন্তু তাদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিতর্ক এখন বেশ জোরালো।
এই বিতর্কের মূল কারণ হলো, অনেকে মনে করেন ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের বিষয়টি এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
এই বিতর্কের একটি বড় দিক হলো খেলাধুলায় ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণ। বিভিন্ন রাজ্যে এমন আইন তৈরি হয়েছে, যেখানে ট্রান্সজেন্ডার নারী খেলোয়াড়দের নারী বিভাগে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এতে মেয়েদের অধিকার সুরক্ষিত হবে। আবার, পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাদের অধিকার সীমিত করার চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের পক্ষে যারা কথা বলছেন, তাদের মতে, এটি একটি নাগরিক অধিকারের প্রশ্ন। তারা মনে করেন, সমাজের এই ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য চিকিৎসা নেওয়াটা প্রয়োজনীয় হতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্কের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভাজন। কিছু রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর মধ্যে এমন ধারণা রয়েছে যে, ট্রান্সজেন্ডাররা সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
এমনকি তাদের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
তবে, অনেকেই মনে করেন, ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের বিষয়টি নিয়ে এত আলোচনা হওয়া উচিত নয়। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা রয়েছে, যা সমাধানে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিতর্কের ফলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে। ডেমোক্রেট দল এই ইস্যুতে তাদের অবস্থান নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত।
কারণ, তারা একদিকে তাদের প্রগতিশীল সমর্থকগোষ্ঠীকে ধরে রাখতে চায়, অন্যদিকে মধ্যপন্থী ভোটারদেরও অসন্তুষ্ট করতে চায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার বিষয়ক আইন নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে। কিছু রাজ্যে তাদের অধিকারকে সীমিত করার চেষ্টা হচ্ছে, আবার কোথাও কোথাও তাদের প্রতি সমর্থন জানানো হচ্ছে।
এই বিতর্কের রাজনৈতিক প্রভাব কতদূর পর্যন্ত যায়, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস