গাজায় জিম্মিদের মুক্তি চেয়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোয় ইসরায়েলি রিজার্ভ সেনাদের বরখাস্ত করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। সম্প্রতি ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর কয়েকজন রিজার্ভ সেনা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অবিলম্বে জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান।

এমনকি এর জন্য তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পক্ষেও মত দেন তারা। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ঘটনার জেরে ওই সেনাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

খবর অনুযায়ী, বরখাস্ত হওয়া সেনাদের মধ্যে অনেকে বিমান বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তবে ঠিক কতজন সেনা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

আইডিএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বাক্ষরকারীদের তালিকা যাচাই করে দেখা হচ্ছে, কতজন এখনো বাহিনীতে কর্মরত আছেন।

জানা গেছে, ইসরায়েলের প্রধান দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত ওই চিঠিতে কয়েকশ’ বিমান সেনা ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।

তাদের দাবি, বর্তমান যুদ্ধ সামরিক লক্ষ্য অর্জনের পরিবর্তে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থে পরিচালিত হচ্ছে।

চিঠিতে তারা আরও লেখেন, যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে জিম্মি, সেনা সদস্য ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু বাড়বে।

এর ফলে রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে হতাশা আরও বাড়বে।

এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।

নেতানিয়াহু একে ‘চরমপন্থী গোষ্ঠীর’ কাজ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তাদের দাবি, এই ধরনের কার্যকলাপ দেশের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে।

এছাড়াও, যারা সেনাদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের প্রশংসা করেছেন তারা।

অন্যদিকে, দেশটির অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এক সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, যারা সেনাদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই সেনাদের এমন বিদ্রোহ এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক মেনে নেব না।’

উল্লেখ্য, গত ১৮ মাস ধরে গাজায় যুদ্ধ চলছে।

এর আগে গত অক্টোবরে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েল পুনরায় সেখানে সামরিক অভিযান শুরু করে।

এর জেরে রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।

তাদের একাধিকবার রিজার্ভ সেনা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে, যা তাদের ব্যক্তিগত ও আর্থিক জীবনে প্রভাব ফেলেছে।

ইসরায়েলের একটি জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৭০ শতাংশ ইসরায়েলি নাগরিক জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন