বরফের দেশ নরওয়ের উত্তরে, আর্কটিক সার্কেলে অবস্থিত আলটা শহরটি যেন প্রকৃতির এক অপরূপ লীলাভূমি। এখানকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যেকোনো ভ্রমণকারীর মন জয় করে নেয়।
ওসলো থেকে প্লেনে করে এখানে পৌঁছানো যায়, যা বাংলাদেশের ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে। এখানকার গ্রীষ্মকালে, যখন সূর্যের আলো ২৪ ঘণ্টা পাওয়া যায়, তখন যেন প্রকৃতির অন্য রূপ দেখা যায়।
দিগন্ত বিস্তৃত তুষারক্ষেত্র, গভীর ফিয়োর্ড, দ্বীপ আর পাথুরে ভূমি – সব মিলিয়ে আলটাকে যেন স্বর্গ বানিয়েছে।
আলটাতে প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি, এখানকার সংস্কৃতিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এখানকার আদিবাসী “সামী” সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রা, তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, পর্যটকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে।
এছাড়াও, আলটা মিউজিয়ামে ৭,০০০ বছর আগের পুরনো পাথরের চিত্রকর্মগুলো (petroglyphs) ইতিহাস প্রেমীদের জন্য এক বিশেষ আকর্ষণ।
আলটাতে ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ হল প্যাক-রাফটিং (pack-rafting)। যারা জলপথে ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ।
হালকা ওজনের রাফটিং নৌকা পিঠে নিয়ে হেঁটে যাওয়া যায় এবং পথের মাঝে সুন্দর নদীগুলোতে এই নৌকার মাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো যায়। এটি প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার এক অসাধারণ উপায়।
সোরিসনিভা’র আর্কটিক ওয়াইল্ডারনেস লজ (Arctic Wilderness Lodge) -এ প্যাক-রাফটিংয়ের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত, যখন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে, তখন আলটা নদীর স্বচ্ছ জলে এই রাফটিং করা যায়।
যারা নতুন, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ অভিজ্ঞতা। কারণ, এখানে অভিজ্ঞ গাইডরা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
প্যাক-রাফটিং ছাড়াও, এখানে আরও অনেক কিছু করার আছে। যেমন – কিং ক্র্যাব ধরা, কুকুর চালিত গাড়িতে চড়া, হাইকিং এবং অশ্বারোহণ ইত্যাদি।
এছাড়াও, এখানকার স্থানীয় খাবারগুলোও পর্যটকদের মন জয় করে। মাকু এবং লাভ্ভু নামক দুটি রেস্টুরেন্টে পরিবেশন করা হয় স্থানীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি নানা সুস্বাদু খাবার।
এখানকার মেনুতে আলটা স্যামন, মूस এবং ক্লাউডবেরির মতো আকর্ষণীয় খাবার পাওয়া যায়।
যারা প্রকৃতির মাঝে শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে কিছু সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য আলটা হতে পারে একটি উপযুক্ত স্থান।
এখানকার প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, প্যাক-রাফটিংয়ের মতো আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ, আলটাকে একটি বিশেষ গন্তব্য করে তুলেছে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক