বাড়িতে বসেই জরায়ুমুখের ক্যান্সার পরীক্ষার নতুন দিগন্ত, অনুমোদন দিল এফডিএ।
বাংলাদেশে জরায়ুমুখের ক্যান্সার নারীদের জন্য একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রতি বছর অনেক নারী এই রোগে আক্রান্ত হন এবং এর কারণে অনেক জীবনহানি ঘটে।
সাধারণত, জরায়ুমুখের ক্যান্সার সনাক্তকরণের জন্য নারীদের হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়। কিন্তু সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ) এমন একটি নতুন পদ্ধতির অনুমোদন দিয়েছে যা নারীদের জন্য এই পরীক্ষাটিকে আরও সহজ ও সুবিধাজনক করে তুলবে।
এফডিএ-এর অনুমোদনের ফলে এখন থেকে নারীরা ঘরে বসেই জরায়ুমুখের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং পরীক্ষা করতে পারবেন। এই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন হবে ‘teal wand’ নামক একটি বিশেষ ডিভাইসের, যা Teal Health নামের একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা তৈরি করেছে।
এই ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে নারীরা নিজেরাই তাঁদের যোনি থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে পারবেন। এরপর সেই নমুনা পরীক্ষার জন্য একটি ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে, যেখানে হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি)-এর উপস্থিতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হবে।
এইচপিভি ভাইরাস জরায়ুমুখের ক্যান্সারের একটি প্রধান কারণ।
এই নতুন পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, নারীদের ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। ‘teal wand’ ব্যবহার করে তাঁরা বাড়িতে বসেই স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে নমুনা সংগ্রহ করতে পারবেন।
Teal Health-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কারা ইগান জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে পরীক্ষার ফল নির্ভুলভাবে পাওয়া যায়, যেমনটা একজন স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে পরীক্ষা করালে পাওয়া যায়।
এই পরীক্ষা কিভাবে কাজ করবে? প্রথমে, Teal Health-এর ওয়েবসাইট থেকে একটি কিট সংগ্রহ করতে হবে, যার জন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র প্রয়োজন হবে।
এরপর, ‘teal wand’ ব্যবহার করে নমুনা সংগ্রহ করে তা ল্যাবে পাঠাতে হবে। পরীক্ষার ফল একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনে রোগীকে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য পরামর্শ দেওয়া হবে।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি এই নতুন পদ্ধতির অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, এই পদ্ধতিতে নারীরা আরও সহজে স্ক্রিনিং করাতে পারবেন, যা জরায়ুমুখের ক্যান্সার সনাক্তকরণে সহায়ক হবে।
বিশেষ করে, যারা স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে দূরে থাকেন বা হাসপাতালে যেতে অসুবিধা বোধ করেন, তাঁদের জন্য এই পদ্ধতি খুবই উপকারী হবে।
তবে, বাংলাদেশে এই ধরনের পদ্ধতি চালু করা হলে, তা নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। যদিও এই পরীক্ষা এখনো বাংলাদেশে সহজলভ্য নয়, তবে ভবিষ্যতে এর সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা গেলে তা নারীদের জন্য ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক হবে।
বর্তমানে, জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য এইচপিভি ভ্যাকসিন গ্রহণ করা এবং নিয়মিত স্ক্রিনিং করানো অত্যন্ত জরুরি।
তথ্যসূত্র: সিএনএন