মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর এবং ব্যয়ের একটি বিতর্কিত বিলu হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসেu সামান্য ভোটের ব্যবধানে পাস হয়েছে। এই বিলu দেশটির অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নীতিমালার একটি বড় অংশ কার্যকর করার লক্ষ্যে এই বিলটি তৈরি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে দীর্ঘ বিতর্কের পর এটি অনুমোদন লাভ করে, যেখানে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল।
বিলটিতে প্রধানত কর হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে, কিন্তু এর ফলে দেশের ঋণের বোঝা আরও কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
যদিও ট্রাম্প এই বিলটিকে দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ভোটাভুটিতে ডেমোক্র্যাট দলের সকল সদস্য এবং কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য এর বিপক্ষে ভোট দেন।
সামান্য ব্যবধানে বিলটি পাস হওয়ায় এখন এটি সিনেটে যাবে, যেখানে এটি আরও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। এই বিলu ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করবে, যার মধ্যে টিপস এবং গাড়ির ঋণে নতুন কর ছাড়, সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিলu আগামী দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের ঋণ প্রায় ৩.৮ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়াতে পারে। বর্তমানে দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩৬.২ ট্রিলিয়ন ডলার।
এই বিলu পাস হওয়ার ফলে একদিকে যেমন কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যাবে, তেমনি সরকারি বিভিন্ন খাতে ব্যয় সংকোচনেরও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এর ফলে দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য ও খাদ্য কর্মসূচিতে কাটছাঁট হতে পারে। এছাড়া, অভিবাসন নীতি কঠোর করারও প্রস্তাব রয়েছে।
বিলu পাসের সময় দেশের ঋণের পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে জিডিপির ১২৪ শতাংশ ঋণ রয়েছে, যার ফলে মুডি’স-এর মতো ক্রেডিট রেটিং সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ক্রেডিট রেটিং কমিয়ে দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এমন একটি বিলu দেশের আর্থিক অবস্থার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিলu নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এর বিরোধীরা বলছেন, এটি ধনী ব্যক্তিদের সুবিধা দেবে, তবে সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, সমর্থকরা বলছেন, এটি অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় এবং অনেক আমেরিকান নাগরিকের জন্য করের বোঝা কমাতে সহায়ক হবে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী জানা যায়, এই বিলu নিয়ে এখনো অনেক আলোচনা ও বিতর্ক চলছে।
এখন সিনেটে বিলটি কী ধরনের পরিবর্তন হয় এবং এর চূড়ান্ত রূপ কেমন হয়, সেদিকেই সবার দৃষ্টি। তথ্য সূত্র: আল জাজিরা