ভেনেজুয়েলায় অনুষ্ঠিত হলো আঞ্চলিক ও স্থানীয় নির্বাচন, যেখানে ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশ কম। বিরোধী দল এই নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, আর সরকারের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়, যা অনেকের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ভোট কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষক ছিল না, এবং ভোটারদের মধ্যে প্রার্থীদের সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না।
তাছাড়া, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদেরও দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত বছর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল নিয়ে বিতর্ক ছিল, এবং বিরোধী দল নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছিল। এবারও অনেকে ভোট দিতে উৎসাহ বোধ করেনি।
রাজধানী কারাকাসের বাসিন্দা পাওলা আরানগুরেন বলেন, “গতবার তো তারা ভোট চুরি করেছে। আবার কেন হতাশ হতে যাব?”
বিরোধী দল মনে করে, ভোটারদের অংশগ্রহণ প্রেসিডেন্ট মাদুরোর ক্ষমতাকে বৈধতা দেবে, যা তারা সরকারের দমনমূলক নীতির অংশ হিসেবে দেখছে।
নির্বাচনের পর সরকার বিক্ষোভকারীদের দমন করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়, যাতে বহু মানুষের হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
তবে, বিরোধী দলের কেউ কেউ মনে করেন, নির্বাচনে ভোট দেওয়াটা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। তাদের মতে, ভোটের মাধ্যমে মাদুরো সরকারের প্রতি নিজেদের অনাস্থা জানানো সম্ভব।
যদিও অনেকের মধ্যে ভোট দেওয়া নিয়ে দ্বিধা রয়েছে, কারণ তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে হয়তো কোনো লাভ হবে না।
সরকার অবশ্য এই নির্বাচনে তাদের বিশাল জয়ের কথা বলছে, যেমনটা তারা আগের স্থানীয় নির্বাচনগুলোতেও করে এসেছে। নির্বাচনের আগে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, খুব কম সংখ্যক ভোটার ভোট দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন।
যারা ভোট দিতে চেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট মাদুরো বিরোধী দলের বিরুদ্ধে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন। নির্বাচনের আগে তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ফ্যাসিবাদীরা ভাড়াটে সৈন্য এনেছিল, কিন্তু আমরা ইতোমধ্যে ৫০ জনের বেশি ভাড়াটে সৈন্যকে ধরেছি, যারা দেশে বোমা পুঁতেছিল এবং সহিংসতার পরিকল্পনা করছিল।”
অন্যদিকে, অনেক ভোটার ভয়ে ভোট দিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের আশঙ্কা ছিল, ভোট না দিলে হয়তো তারা সরকারি চাকরি অথবা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
একজন সরকারি কর্মচারী মিগুয়েল ওতেরো জানান, “আমার বেশিরভাগ বন্ধু ভোট দিতে যাচ্ছে না, এমনকি তারা সাদা খাতা জমা দেওয়ারও পক্ষপাতী নয়। কিন্তু আমাদের তো নিয়ম মানতে হবে।
প্রমাণ হিসেবে ভোটকেন্দ্রে থাকার ছবি পাঠাতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা