বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চিপ প্রস্তুতকারক তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (TSMC) আগামী কয়েক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক বিশাল বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
এই প্রকল্পের অধীনে, কোম্পানিটি প্রায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকার সমান) বিনিয়োগ করবে এবং সেখানে আরও পাঁচটি নতুন কারখানা স্থাপন করবে।
এই বিনিয়োগের মূল লক্ষ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর চিপের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চিপের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে, যা স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং গাড়ির মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য অপরিহার্য।
তাইওয়ানের এই বৃহৎ বিনিয়োগের ঘোষণাটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে তারা এশিয়ার উপর চিপ নির্ভরতা কমাতে পারবে।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় চিপ কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিশ্বজুড়ে সরবরাহ শৃঙ্খলে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
এর ফলস্বরূপ, অনেক শিল্পকারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং জিনিসপত্রের দামও বেড়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেমিকন্ডাক্টর চিপ তৈরির ক্ষেত্রে ফেডারেল ট্যাক্স প্রণোদনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তবে, তিনি দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে আমদানি করা চিপের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন।
অন্যদিকে, বর্তমান প্রশাসন, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, অভ্যন্তরীণ চিপ উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
এর অংশ হিসেবে, বাইডেন সরকার ‘CHIPS and Science Act’ নামে একটি আইন তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে শক্তিশালী করার জন্য ২৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এই আইনের অধীনে, TSMC-কে তাদের অ্যারিজোনার কারখানার জন্য ভর্তুকি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
টিএসএমসি-র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সি সি ওয়ে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে এই বিনিয়োগ পরিকল্পনার কথা জানান।
সভায় ট্রাম্পও উপস্থিত ছিলেন।
টিএসএমসি-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে উদ্ভাবন ও উন্নতির জন্য তাদের গ্রাহকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বিনিয়োগের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
বাণিজ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা শীর্ষস্থানীয় সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করতে রাজি করিয়েছেন।
এই পদক্ষেপগুলো জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলা করতে এবং প্রযুক্তি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা