নিউ ইয়র্কের পাতাল রেলে বিলম্ব কমাতে স্মার্টফোন ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (MTA) এবং গুগল পাবলিক সেক্টরের যৌথ উদ্যোগে ‘ট্র্যাকইনস্পেক্ট’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে রেললাইনের ত্রুটিগুলো আগেভাগে শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো, যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ কমানো এবং সময় সাশ্রয় করা।
নিউ ইয়র্কের মতো ব্যস্ত শহরে গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত রাখা অত্যন্ত জরুরি। সেখানকার পাতাল রেল ব্যবস্থা শহরের জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রায় ১২০ বছর পুরনো এই রেলপথে প্রায়ই নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়, যার ফলে প্রায়ই ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কয়েক মাসে MTA-এর হিসাব অনুযায়ী, কয়েক হাজার ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছিল।
ট্র্যাকইনস্পেক্ট প্রকল্পের আওতায়, গুগলের তৈরি স্মার্টফোন ব্যবহার করে শব্দ এবং অন্যান্য ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই ডেটা বিশ্লেষণ করে রেললাইনের ফাটল বা অন্য কোনো ত্রুটি শনাক্ত করা হবে। স্মার্টফোনগুলো ট্রেনের বগির ভেতরে এবং বাইরে স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো শব্দ এবং কম্পন রেকর্ড করে, যা AI বিশ্লেষণের কাজে লাগে।
প্র প্রকল্পের সহকারী প্রধান ট্র্যাক অফিসার রব সারনো জানান, স্মার্টফোনগুলি প্রতি মিনিটে অসংখ্য ডেটা সংগ্রহ করে, যার মাধ্যমে রেললাইনের দুর্বলতা চিহ্নিত করা সম্ভব। স্মার্টফোনগুলির মাধ্যমে সংগৃহীত ডেটা বিশ্লেষণ করে সমস্যা চিহ্নিত করার পর, তা মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে একদিকে যেমন যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে, তেমনি কর্তৃপক্ষের অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় হবে।
পরীক্ষামূলকভাবে, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য পুরনো মডেলের কিছু রেল বগি নির্বাচন করা হয়েছিল। এরপর, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত, চারটি R46 মডেলের ট্রেনে এই স্মার্টফোনগুলো স্থাপন করা হয়। এই সময়ে ডিভাইসগুলো প্রায় ৩৩৫ মিলিয়ন সেন্সর রিডিং, ১ মিলিয়ন জিপিএস লোকেশন এবং ১,২০০ ঘণ্টার অডিও ডেটা সংগ্রহ করেছে।
ট্র্যাকইনস্পেক্ট প্রকল্পের সাফল্যের ফলে, এখন অন্যান্য পরিবহন সংস্থাও এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছে। নিউ ইয়র্কের MTA কর্তৃপক্ষও ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তিকে আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা করছে। আশা করা যায়, এই উদ্যোগের ফলে নিউ ইয়র্কের পাতাল রেল আরও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন