অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ও নিউ সাউথ ওয়েলসে ঘূর্ণিঝড় ‘আলফ্রেড’-এর তাণ্ডব, জরুরি অবস্থা জারি, মৃতের সংখ্যা ১
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড এবং নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যে প্রাক্তন ঘূর্ণিঝড় ‘আলফ্রেড’-এর প্রভাবে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং এরই মধ্যে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বহু ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।
কুইন্সল্যান্ডের হার্ভে বে এলাকার মেয়র জর্জ সেইমুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার আগে পর্যাপ্ত সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। রবিবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঐ এলাকায় ২৬০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়, যার ফলে জরুরি অবস্থা তৈরি হয় এবং উদ্ধারকাজ চালাতে হয়। কুইন্সল্যান্ডের জরুরি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সাহায্যের জন্য প্রায় ৩,৬৭৬টি ফোন কল এসেছে, যা তাদের ইতিহাসে এক দিনে আসা সর্বোচ্চ ফোন কলের সংখ্যা।
আবহাওয়া দপ্তর অবশ্য তাদের পূর্বাভাসকে রক্ষা করেছে। তাদের দাবি, তারা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিল এবং সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার ডেভিড ক্রিসাফুলি জানিয়েছেন, রবিবার ও সোমবার দক্ষিণ-পূর্ব কুইন্সল্যান্ডের মানুষের জন্য বেশ উদ্বেগজনক ছিল, কারণ অনেক এলাকায় কয়েকশ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। জরুরি বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করছেন।
বন্যার কারণে কুইন্সল্যান্ড ও নিউ সাউথ ওয়েলসের দুই লক্ষাধিক মানুষ এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 400 মিলিমিটার ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়া দপ্তর আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
কুইন্সল্যান্ডের লোগান, গোল্ড কোস্ট এবং রেডল্যান্ডস-এ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, স্কুলগুলো হয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, অথবা সীমিত সংখ্যক শিক্ষক নিয়ে খোলা রাখা হয়েছে।
এদিকে, সেকওয়াটার কর্তৃপক্ষ বন্যার পানিতে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উপচে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে বন্যার পানি ও স্থানীয় জলপথগুলো এড়িয়ে চলতে সতর্ক করেছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসে একজন নিহত হয়েছেন এবং সেখানেও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১৮০০ মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন এবং আরও ১৮,৫০০ জনের বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান