মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের জেরে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কায় মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে।
এর ফলে, প্রধান শেয়ার সূচক ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ (Dow Jones Industrial Average) প্রায় ৭০০ পয়েন্ট বা ১.৫৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
একইসাথে, এসএন্ডপি ৫০০ (S&P 500) সূচক ১.২২ শতাংশ এবং নাসডাক কম্পোজিট (Nasdaq Composite) ০.৩৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক কানাডা ও মেক্সিকোর উপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ এই দরপতন হয়েছে।
এই পদক্ষেপের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে, যা ১৯৩০ এর দশকের মহামন্দার (Great Depression) পরিস্থিতির অনুরূপ হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল অ্যান্ড্রু উইলসন এক সাক্ষাৎকারে একে ‘অবনতির শুরু’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতার কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন শুল্ক আরোপের হুমকি কেবল আলোচনার কৌশল ছিল না, বরং এটি বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায়, ইউরোপের শেয়ার বাজারেও পতন দেখা গেছে, যেখানে STOXX ইউরোপ ৬০০ সূচক ২.১৪ শতাংশ এবং জার্মানির DAX সূচক ৩.৫৪ শতাংশ কমেছে।
এশিয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে, জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১.২ শতাংশ এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ০.২৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্যও কমে গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বল্পমেয়াদী অনিশ্চয়তা এবং মার্কিন অর্থনীতির সম্ভাব্য মন্দা নিয়ে উদ্বেগের ইঙ্গিত দেয়।
মেক্সিকোর পেসো এবং কানাডার ডলারের মূল্যেও সামান্য পরিবর্তন দেখা গেছে।
অন্যদিকে, চীনও এই শুল্কের জবাব দিয়েছে।
তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা মুরগি, শুকরের মাংস, গরুর মাংস এবং কিছু কৃষি পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও বলেছেন, তারাও মার্কিন পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
শেয়ার বাজারের এই দরপতন এবং বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে, বিনিয়োগকারীরা এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
অনেকেই মনে করছেন, এই অস্থিরতা স্বল্পমেয়াদী হতে পারে এবং বাজার দ্রুত স্থিতিশীল হবে।
তবে, বাণিজ্য যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন