মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভেনেজুয়েলার একটি গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে থাকা ব্যক্তিদের বিতাড়িত করার জন্য ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছেন।
এই বিতর্কিত আইনটি মূলত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বিদেশি নাগরিকদের বিতাড়িত করার ক্ষমতা দেয় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পরেই একজন ফেডারেল বিচারক তার এই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
১৭৯৮ সালে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল।
এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, যুদ্ধের সময় বিদেশি নাগরিকদের দ্বারা দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দূর করা।
আইনটি প্রেসিডেন্টকে বিদেশি নাগরিকদের আটক ও বিতাড়িত করার ব্যাপক ক্ষমতা দেয়, যদি তারা দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়।
যদিও এই আইনের প্রয়োগ খুবই সীমিত, তবুও এর ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে।
ইতিহাসে এই আইনের ব্যবহার খুবই কম দেখা গেছে।
১৮১২ সালের যুদ্ধ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই আইনের প্রয়োগ হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, জার্মান, ইতালীয় এবং জাপানি বংশোদ্ভূত অনেক মানুষকে বন্দী করতে এই আইনের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সমালোচকদের মতে, ট্রাম্প এই আইনের অপব্যবহার করছেন, কারণ এটি সাধারণত বিদেশি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়।
আইনজীবীরা বলছেন, শান্তিকালে এই আইনের প্রয়োগ করে ট্রাম্প আসলে অভিবাসন আইনকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছেন, যা গুরুতর ক্ষমতার অপব্যবহারের শামিল।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর, ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ গ্যাং-কে একটি ‘আক্রমণকারী শক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, এই গ্যাং ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘নিয়মিত যুদ্ধ’ চালাচ্ছে।
যদিও কংগ্রেসের গবেষণা বিভাগ জানাচ্ছে, বিদেশি সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে কোনো গ্যাং-এর কার্যকলাপকে সীমিত আক্রমণের পর্যায়ে ফেলা নজিরবিহীন এবং এর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনারও প্রয়োজন।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, সম্প্রতি কয়েকদিনে প্রায় ৩৫০ জন ব্যক্তিকে ভেনেজুয়েলায় ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ১৮০ জন গুয়ান্তানামো বে নৌ-ঘাঁটিতে কিছুদিন ছিলেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান