বিখ্যাত শিল্পী দম্পতি: খ্যাতি যখন দুজনের মধ্যে একজনের বেশি…
শিল্পকলার জগৎ সবসময়ই মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। শিল্পীদের ব্যক্তিগত জীবন, তাদের প্রেম, সম্পর্কের গল্প – এসব নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা চলে সবসময়।
সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া একটি তথ্যচিত্র, “টু স্ট্রেঞ্জার্স ট্রাইং নট টু কিল ইচ আদার” তেমনই এক শিল্পী দম্পতির গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে। এই ছবিতে আলোকপাত করা হয়েছে খ্যাতি ও ভালোবাসার এক জটিল সমীকরণের ওপর।
ছবিটি মূলত খ্যাতিমান মার্কিন স্ট্রিট ফটোগ্রাফার জোয়েল মেয়ারোভিজ এবং ইংরেজ শিল্পী ম্যাগি ব্যারেটের সম্পর্কের নানা দিক তুলে ধরে। তাদের সম্পর্কের গভীরতা, জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত, এমনকি খ্যাতির কারণে তাদের মধ্যে তৈরি হওয়া কিছু ব্যবধানও এই ছবিতে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
জোয়েলের খ্যাতি যতটা, ম্যাগি যেন কিছুটা আড়ালে। এই বিষয়টি তাদের সম্পর্কের ওপর কেমন প্রভাব ফেলেছে, তা-ও দেখা যায় ছবিটিতে।
নির্মাতা জ্যাকব পার্লমুটার ও মানন ওয়াইমেট এই দম্পতির সঙ্গে এক বছর কাটিয়েছেন। তাদের জীবন কাছ থেকে দেখেছেন এবং ক্যামেরাবন্দী করেছেন। তাদের এই কাজটি ছিল অনেকটা তাদের নিজেদের সম্পর্কের প্রতিচ্ছবি খোঁজার মতো।
কারণ, তারাও শিল্পী এবং তাদের সম্পর্কের গভীরতাও অনেকটা একই রকম। তাদের ভাষায়, “দুজন শিল্পী দম্পতির জীবন কেমন হয়, তা জানার আগ্রহ থেকেই আমাদের এই ছবি তৈরি।
ছবিটিতে শুধু ভালোবাসা বা খ্যাতির গল্প নেই, বরং জীবনের নানা দিক, যেমন – মৃত্যু, সম্পর্কের ভবিষ্যৎ – এসব বিষয়ও উঠে এসেছে। তাদের ছাই কোন দেশে রাখা হবে, নিউ ইয়র্ক টাইমসে কার মৃত্যুসংবাদ আগে ছাপা হবে – এমন সব আলোচনাও তারা করেছেন।
ম্যাগি ব্যারেট ছবিটির বিষয়ে বলেন, “আমি খুবই উত্তেজিত ছিলাম। এই দারুণ, তরুণ নির্মাতারা আমাদের নিয়ে ছবি বানাতে চায়! এটা একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল।
অন্যদিকে, জোয়েল মেয়ারোভিজ জানান, “আমাকে আগেও ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আমি রাজি হইনি। জ্যাকব ও মাননের মধ্যে এমন কিছু ছিল, যা আমাকে আকর্ষণ করেছিল। তাদের আন্তরিকতা, সততা ও খোলা মনের পরিচয় পেয়েছিলাম।
তাদের প্রতি আমাদের সম্মান ছিল, যা সঙ্গে সঙ্গেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
এই ছবিতে ম্যাগি ব্যারেটের শিল্পী হিসেবে পরিচিতি এবং তার কাজের সীমাবদ্ধতাগুলোও তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, “বিখ্যাত একজন মানুষকে বিয়ে করার কারণেও হয়তো আমার শিল্পী জীবনের গতি কমে গিয়েছিল।
এই বিষয়টি শুধু শিল্পী দম্পতিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সমাজে এমন অনেক সম্পর্ক রয়েছে, যেখানে একজন বেশি জনপ্রিয় হলে, অন্যজনের পরিচিতি কিছুটা ম্লান হয়ে যায়।
ছবিটি মুক্তির পর সমালোচক ও দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে, মেয়ারোভিজ ও ব্যারেট মনে করেন, হয়তো দর্শকদের মধ্যে অনেকেই তাদের সম্পর্কের “স্বাভাবিক” দিকটা দেখতে চায়।
শিল্পী মানুষগুলো যে সবার মতোই, তাদেরও যে ব্যক্তিগত জীবন আছে, এই ধারণাটা হয়তো অনেকের কাছে আকর্ষণীয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন