সোশ্যাল মিডিয়ার দৌড়ে টিকে থাকতে রেস্তোরাঁগুলোর নতুন কৌশল।
বর্তমান ডিজিটাল যুগে, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিহার্য। রেস্তোরাঁ ব্যবসা এর ব্যতিক্রম নয়।
গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রেস্তোরাঁগুলো এখন কনটেন্ট তৈরির দিকে ঝুঁকছে। ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা হচ্ছে, যেখানে রান্নার কৌশল থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁর ভেতরের জীবনযাত্রা তুলে ধরা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের অনেক রেস্তোরাঁ এই পথে হেঁটে সাফল্য পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, লন্ডনের ‘ফ্যালও’ রেস্তোরাঁর কথা বলা যায়। তারা ইউটিউবে ‘আইকনিক ব্রিটিশ ডিশেস’ (Iconic British Dishes) নামে একটি চ্যালেঞ্জ শুরু করেছে, যেখানে বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্রিটিশ খাবার তৈরির প্রক্রিয়া দেখানো হয়।
তাদের এই উদ্যোগ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। শুধু ‘ফ্যালও’ নয়, ‘ওন্দা পাস্তা বার’ এবং ‘আরবান তন্দুর’-এর মতো রেস্তোরাঁগুলোও টিকটক ও অন্যান্য মাধ্যমে তাদের কনটেন্ট আপলোড করে গ্রাহকদের মন জয় করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে, রেস্তোরাঁগুলো তাদের খাদ্য পরিবেশন থেকে শুরু করে ভেতরের পরিবেশ— সবকিছুই দর্শকদের সামনে তুলে ধরছে। রান্নার বিভিন্ন কৌশল, মেনুর বিশেষত্ব, এমনকি কর্মীদের ব্যক্তিগত গল্পও এখন কনটেন্টের অংশ।
অনেক রেস্তোরাঁ তাদের খাদ্য পরিবেশনের ছবি ও ভিডিও আপলোড করে, যা গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করে।
তবে, সোশ্যাল মিডিয়ার এই উন্মাদনার কিছু বিপদও রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, কনটেন্ট তৈরির পেছনে অতিরিক্ত মনোযোগ দিতে গিয়ে খাবারের গুণগত মান কমে যাচ্ছে।
এছাড়া, সবার একই ধরনের কনটেন্ট তৈরির কারণে অনেক সময় গ্রাহকদের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসে। কিছু রেস্তোরাঁ তাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকার কৌশলও অবলম্বন করছে।
তারা তাদের নিজস্বতা বজায় রাখতে এবং গ্রাহকদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার সীমিত করছে।
বাংলাদেশেও রেস্তোরাঁ ব্যবসার চিত্রটা অনেকটা একই রকম। বর্তমানে, ফেসবুক এবং ইউটিউব-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো খাদ্যপ্রেমীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
অনেক বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ এখন তাদের মেনু, রান্নার ভিডিও এবং রেস্তোরাঁর পরিবেশ— এসব কিছু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত আপলোড করে।
তবে, সোশ্যাল মিডিয়ার এই দৌড়ে টিকে থাকতে হলে, রেস্তোরাঁগুলোকে তাদের কনটেন্টে ভিন্নতা আনতে হবে। শুধুমাত্র খাবারের ছবি আপলোড করলেই চলবে না, বরং গ্রাহকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে।
তাদের রুচি ও চাহিদার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। একইসাথে, খাবারের গুণগত মান বজায় রাখতে হবে, যা ব্যবসার দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।
সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে, রেস্তোরাঁ ব্যবসার ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করছে তাদের ডিজিটাল কৌশলের ওপর। যারা এই পরিবর্তনকে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই টিকে থাকবে, এবং সফল হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান