পাকিস্তানী রান্নার স্বাদ: ‘পাকিস্তান’ বইয়ে মুখরোচক কিছু পদ।
ঈদ-উল-ফিতরের দিনে মেরি জিলানির দাদীর টেবিলে একটি বিশেষ পদ ছিল—মটন পোলাও। এটি ছিল একটি সুগন্ধি চালের পদ, যা হালকা মশলার সাথে মাংসের ঝোলে রান্না করা হতো।
এই পদটি যেমন আরামদায়ক, তেমনই উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে। আর এর সাথে রসুন চাটনির মতো ঝাল কিছু থাকলে তো কথাই নেই!
মেরি জিলানির ‘পাকিস্তান’ নামক রান্নার বইটিতে এই পোলাও, রসুন চাটনি এবং সেমাই রান্নার রেসিপি দেওয়া হয়েছে। বইটিতে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের রান্নার রেসিপি সন্নিবেশিত করা হয়েছে, যা খাদ্যরসিকদের জন্য দারুণ আকর্ষণীয়।
মটন পোলাও (৬-৮ জনের জন্য)
মটন পোলাও একটি ক্লাসিক পদ, যা ঈদ সহ বিভিন্ন উৎসবে পরিবেশন করা হয়। এই রান্নার মূল আকর্ষণ হলো মাংসের স্বাদ।
নরম মাংস, বাসমতি চাল এবং সুগন্ধি মশলার মিশ্রণে তৈরি এই পদটি খাদ্যপ্রেমীদের মন জয় করে।
উপকরণ:
প্রণালী: প্রথমে একটি বড় পাত্রে ৮-১০ কাপ পানি নিয়ে মাংস, অর্ধেক পেঁয়াজ, লবঙ্গ, এলাচ, দারুচিনি, জিরা, ১ টেবিল চামচ রসুন বাটা এবং ১ টেবিল চামচ লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে উচ্চ তাপে ফুটিয়ে নিন।
ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে মাংস নরম হওয়া পর্যন্ত ১-২ ঘণ্টা রান্না করুন। মাংস তুলে নিয়ে পানি ছেঁকে নিন।
অন্য একটি পাত্রে তেল গরম করে বাকি পেঁয়াজ সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এরপর রসুন বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
মাংস এবং বাকি লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ৬ কাপ মাংসের ঝোল দিন। ফুটে উঠলে চাল দিয়ে ১০ মিনিটের জন্য রান্না করুন।
এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে সবচেয়ে কম আঁচে ১০-১২ মিনিটের জন্য ভাপ দিন। পরিবেশনের আগে পোলাও নেড়ে পরিবেশন করুন।
লাহসান কি চাটনি (রসুন চাটনি)
এই চাটনিটি তৈরি করেছেন আইদা খান নামের এক রন্ধনশিল্পী। এটি তাঁর মায়ের রেসিপি।
এই চাটনি খুব ঝাল হয়ে থাকে, তাই অল্প পরিমাণে ব্যবহার করাই ভালো।
উপকরণ:
প্রণালী: রসুন, পেঁয়াজ, মরিচের ফ্লেক্স এবং বার্ডস আই চিলি (যদি ব্যবহার করেন) ফুড প্রসেসরে নিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। একটি ছোট পাত্রে তেল গরম করে পেস্ট ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে কম আঁচে প্রায় ৩৫-৪০ মিনিট রান্না করুন, মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন। পেঁয়াজ এবং রসুন সোনালী হয়ে গেলে ও চাটনির রং গাঢ় হলে নামিয়ে লেবুর রস মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
সেমাই (মিষ্টি ভাজা সেমাই)
উপকরণ:
প্রণালী: মাঝারি আঁচে একটি পাত্রে ঘি গরম করুন। এলাচ দিয়ে ৩০ সেকেন্ড ভাজুন।
সেমাই দিয়ে ২-৩ মিনিট হালকা ভাজুন। এরপর দুধ দিয়ে ফুটিয়ে নিন।
চিনি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ঘন হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। পরিবেশন করার সময় কাঠবাদাম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
‘পাকিস্তান’ বইটি খাদ্যরসিকদের জন্য একটি অসাধারণ সংগ্রহ। এই বইয়ের মাধ্যমে আপনি যেমন পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের রান্নার স্বাদ নিতে পারবেন, তেমনই এই অঞ্চলের সংস্কৃতি সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
বিশেষ করে, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে এই রান্নার অনেক মিল রয়েছে, যা এই বইটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস