পুরুষদের মধ্যে দাড়ি প্রতিস্থাপনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা: এক নতুন ফ্যাশন?
যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে, পুরুষদের মধ্যে দাড়ির ফ্যাশন একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। শুধু ফ্যাশনই নয়, অনেক পুরুষের কাছে এটি এখন আত্মবিশ্বাসের প্রতীকও বটে।
আর এই চাহিদার ফলস্বরূপ, দাড়ির ঘনত্ব বাড়াতে বা যাদের দাড়ি নেই, তাদের জন্য এসেছে ‘দাড়ি প্রতিস্থাপন’ (Beard Transplant)। সম্প্রতি এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, তবে এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কিছু ঝুঁকিও।
সাধারণত, মাথার পেছন থেকে চুল নিয়ে তা দাড়ির স্থানে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতিতে মাথার চুলের ফলিকলগুলি (follicular unit) ব্যবহার করা হয়।
এই প্রক্রিয়াটি বেশ ব্যয়বহুল, এবং এর সাফল্যের হার নির্ভর করে অভিজ্ঞ ডাক্তারের উপর।
লন্ডনের একটি হেয়ার ক্লিনিকের প্রধান নির্বাহী নাদিম খান জানান, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় এই ধরনের চিকিৎসার চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। অনেকেই তাদের চেহারাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে এই পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছেন।
তবে, এই বাজারে অদক্ষ এবং অনভিজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যাও বাড়ছে, যা উদ্বেগের কারণ।
চিকিৎসকরা বলছেন, দাড়ি প্রতিস্থাপন একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা সবার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। বিশেষ করে যাদের দাড়ির ঘনত্ব খুবই কম, তাদের ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা ফলপ্রসূ নাও হতে পারে।
দাড়ি প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত বিষয়ে অনলাইনে বিভিন্ন আলোচনা দেখা যায়। অনেক পুরুষ তাদের অভিজ্ঞতা এবং উদ্বেগের কথা জানান।
কেউ কেউ সফল হয়েছেন, আবার কারও ক্ষেত্রে হয়েছে বিপত্তি।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাড়ি প্রতিস্থাপনের আগে ভালোভাবে সবকিছু জেনে নেওয়া উচিত। অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং নির্ভরযোগ্য ক্লিনিকে চিকিৎসা করানো জরুরি।
এই প্রসঙ্গে, তুরস্কের মত কিছু দেশে কম খরচে এই চিকিৎসা সহজলভ্য হলেও, সেখানে অনভিজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যা বেশি। তাই, কম খরচের লোভে ভুল চিকিৎসা বেছে নেওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
চিকিৎসা খরচ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভিন্ন হতে পারে। যুক্তরাজ্যে এই চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মত, যা নির্ভর করে কতগুলো ফলিকল প্রতিস্থাপন করা হবে তার উপর।
পুরুষদের মধ্যে দাড়ির প্রতি আগ্রহ এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে এর সম্পর্ক অনস্বীকার্য। তবে, যেকোনো চিকিৎসার ক্ষেত্রে, এর ভালো-মন্দ দুটো দিকই বিবেচনা করা উচিত।
দাড়ি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে তাই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ, নির্ভরযোগ্য ক্লিনিক এবং চিকিৎসার খুঁটিনাটি ভালোভাবে জেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
তথ্য সূত্র: The Guardian