গাজায় ইসরায়েলি হামলায় দুই সাংবাদিক নিহত, নিন্দা আন্তর্জাতিক মহলের
সোমবার গাজায় পৃথক দুটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন আল জাজিরা মুবাশির চ্যানেলের প্রতিবেদক হোসাম শাবাত এবং প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিক মোহাম্মদ মনসুর।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সংগঠনগুলো এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
জানা গেছে, ২৩ বছর বয়সী হোসাম শাবাতের গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয়, যেখানে তিনি নিহত হন। অপর এক হামলায় মোহাম্মদ মনসুর, তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে খান ইউনিসে তাঁদের বাড়িতে নিহত হন।
সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। সিপিজের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কার্লোস মার্তিনেজ দে লা সেরনা বলেন, “গাজায় সাংবাদিকদের মরদেহ দেখা এখন যেন একটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এবং হোসাম শাবাত ও মোহাম্মদ মনসুরের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। যুদ্ধক্ষেত্রে সাংবাদিকরা বেসামরিক নাগরিক এবং তাঁদের ওপর হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, তারা শাবাত ও মনসুরকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং তাঁদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আইডিএফের দাবি, শাবাত ছিলেন হামাস জঙ্গি সংগঠনের সদস্য এবং আল জাজিরার সাংবাদিকের ছদ্মবেশে কাজ করতেন। তবে, আল জাজিরা এবং শাবাত এর আগে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
সিপিজে’র পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, “মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে সাংবাদিকদের হত্যা ও তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।”
সিপিজের হিসাব অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাস থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১৭০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। প্যালেস্টাইন জার্নালিস্ট সিন্ডিকেট-এর মতে, এই সংখ্যা আরও বেশি।
তাঁদের হিসাব অনুযায়ী, সংঘর্ষে নিহত সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীর সংখ্যা ২০৮ জন।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, সাংবাদিকরা বেসামরিক নাগরিক এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাঁদের লক্ষ্যবস্তু করা যায় না।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান