মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের একটি চাঞ্চল্যকর কাণ্ড নিয়ে এখন সরগরম আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। খবর অনুযায়ী, ট্রাম্পের উপদেষ্টারা সামরিক পরিকল্পনাসংক্রান্ত কিছু গোপন তথ্য আদান-প্রদান করেছেন সিগন্যাল নামক একটি এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে।
আর এই চ্যাট গ্রুপে ছিলেন আটলান্টিক পত্রিকার সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গও। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর ট্রাম্পের সমর্থক মিডিয়াগুলোতে এই খবরকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
বরং, তাঁরা এই ঘটনাকে হালকাভাবে দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং গোল্ডবার্গের মতো সাংবাদিকদের তীব্র সমালোচনা করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের মতোই এবারও তাঁর সমর্থক মিডিয়াগুলো এমন একটি কৌশল নিয়েছে, যেখানে বিতর্কিত খবরগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এমনকী, অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা প্রমাণ করারও চেষ্টা করা হয়।
তাঁদের মতে, ট্রাম্পের মিডিয়া ব্যবহারের ধরনের কারণে তাঁর নীতি-নির্ধারণেও এর প্রভাব পড়ে।
বর্তমানে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ‘ফক্স নিউজ’-এর মতো মিডিয়াগুলো এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গোল্ডবার্গকে একজন ‘অবিশ্বস্ত সাংবাদিক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তাঁরা এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাইছে না।
এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্প নিজেও বিতর্কিত খবরগুলোকে ‘ভুয়া’ বা ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, যা তাঁর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে, কেউ কেউ এই মিডিয়া কৌশলকে ভালোভাবে দেখছেন না। তাঁদের মতে, ঘটনাটি গুরুতর এবং এর সত্যতা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।
যদিও কিছু মিডিয়া এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে তাঁদের নিজস্ব মতামত জানাচ্ছে। যেমন, ‘ফক্স নিউজ’-এর একটি অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে, ‘আমরাও ভুল করে অন্য কাউকে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে থাকি।’
এই ঘটনার জেরে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে দুটি ভিন্ন ধারা তৈরি হয়েছে। একদিকে, ট্রাম্প-সমর্থক মিডিয়াগুলো ঘটনাটিকে হালকা করে দেখছে এবং অন্যদিকে, মূলধারার মিডিয়াগুলো বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে দুটি ভিন্ন তথ্য-প্রবাহ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক বিভাজন সুস্পষ্ট।
এই বিতর্কের মধ্যে, আটলান্টিক পত্রিকার সাংবাদিক গোল্ডবার্গ জানিয়েছেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন নন। তিনি তাঁর কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন