মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন, গোপন চ্যাট বিতর্কের জেরে।
সম্প্রতি একটি গোপন মেসেজিং অ্যাপে (Signal) অতি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য আদান-প্রদানের ঘটনার জেরে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব, পিট হেজেথের (Pete Hegseth) যোগ্যতা এবং কর্মদক্ষতা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় হেজেথের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত এবং তার নেতৃত্বের ধরন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, হেজেথ একটি গোপন চ্যাট গ্রুপে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর সম্ভাব্য মার্কিন বিমান হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। উদ্বেগের বিষয় হলো, এই চ্যাটে বিস্তারিত তথ্য, যেমন হামলার সময় এবং ব্যবহৃত বিমানের ধরন, অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরেই হেজেথের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
মার্কিন সামরিক এবং নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তাদের একাংশ মনে করেন, একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার এমন আচরণ অত্যন্ত গুরুতর। তাদের মতে, এই ধরনের গোপন তথ্য এভাবে প্রকাশ করা সামরিক প্রোটোকলের চরম লঙ্ঘন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, “সামরিক বাহিনীর জুনিয়র বিশ্লেষকরাও এমনটা করে না।”
শুধু তাই নয়, হেজেথের বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলোও এখন সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিরক্ষা বিভাগে বেশ কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন, যার মধ্যে ছিল কর্মীদের মধ্যে ‘বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তি’ (Diversity, Equity, and Inclusion – DEI) বিষয়ক বিষয়গুলো বাতিল করা। তবে, এসব পদক্ষেপের কারণে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হেজেথের কর্মকাণ্ডে তার অভিজ্ঞতার অভাবও ফুটে উঠেছে বলে মনে করেন অনেকে। তিনি সাধারণত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আসা প্রস্তাবের চেয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে বেশি গুরুত্ব দেন। কর্মকর্তাদের মতে, সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের মতো অভিজ্ঞ নেতারা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো বিবেচনা করতেন।
এদিকে, হোয়াইট হাউস প্রাথমিকভাবে হেজেথের প্রতি সমর্থন দেখালেও, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় তারা এখন বিষয়টির অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য এই ঘটনায় হেজেথের কোনো দায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন।
এই ঘটনার পর হেজেথের নেতৃত্ব দেওয়ার ধরন এবং তার নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের কারণে ভবিষ্যতে সামরিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, গোপন তথ্যের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের এই ঘটনা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন