যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি: ট্রাম্পের শুল্কের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা, বাংলাদেশের জন্য কী প্রভাব?
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া নতুন শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে আবারও একটি বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদদের মতে, এই শুল্কগুলি আমেরিকার অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে, যার সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বিশ্বজুড়ে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলস্বরূপ বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মতো দেশগুলোর পণ্যের ওপর এই শুল্কের হার আরও বেশি হতে পারে।
এর প্রতিক্রিয়ায়, চীন ও ইইউ পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে আমেরিকার বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করবে। এর ফলে, মার্কিন ভোক্তাদের জিনিসপত্র কিনতে বেশি খরচ হবে।
এমনকি ২০২৫ সাল নাগাদ মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, আমেরিকার অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিলে বিশ্বজুড়ে এর প্রভাব পড়বে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও দুর্বল করে দেবে।
যদি আমেরিকার অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তাহলে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে বিশ্ব বাণিজ্যের ওপর। এর ফলে, বিভিন্ন দেশের রপ্তানি কমে যেতে পারে, যা কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, চামড়া এবং পাটজাত পণ্যের মতো প্রধান রপ্তানি খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কারণ এই পণ্যগুলোর বড় বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে সংকট তৈরি হবে, তার প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো বিকল্প বাজার তৈরি করা এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ করা। এর পাশাপাশি, রেমিট্যান্সের ওপর যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বলতার কারণে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের আয় কমে গেলে, দেশের অর্থনীতিতে তার খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই বাণিজ্য নীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশকে তার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে এবং সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রেখে বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে শক্তিশালী করার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন