যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দাম নতুন করে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, যেখানে বার্ড ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমতির দিকে। দেশটির বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম বর্তমানে ৬.২৩ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭০০ টাকার বেশি (ডলার প্রতি ১১৮ টাকা ধরে)।
যদিও বার্ড ফ্লু’র কারণে ডিম উৎপাদনকারী খামারিদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, তবুও বাজারে ডিমের দাম ক্রমাগত বাড়ছে।
খুচরা বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে জানা গেছে, ডিমের চাহিদা বৃদ্ধি এবং সরবরাহ কম থাকা। সাধারণত, ইস্টার উৎসবের সময় ডিমের চাহিদা বাড়ে, যা এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
বাজারে ডিমের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে খামারিরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু বার্ড ফ্লু’র কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমলেও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগছে। কারণ, মার্চ মাস থেকে পাইকারি দাম কমতে শুরু করলেও, খুচরা ব্যবসায়ীরা সেই অনুযায়ী দাম কমাননি।
এছাড়াও, বার্ড ফ্লু’র কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া খামারগুলো পুনরায় ডিম উৎপাদন শুরু করতে কিছুটা সময় নিচ্ছে। একটি মুরগিকে ডিম দেওয়া শুরু করতে প্রায় ছয় মাস বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
বার্ড ফ্লু’র কারণে ডিমের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বার্ড ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে প্রায় তিন কোটি ডিম পাড়া মুরগি মেরে ফেলা হয়।
এর ফলস্বরূপ, বাজারে ডিমের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। যদিও মার্চ মাসে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে, যেখানে মাত্র ২১ লাখ মুরগিকে হত্যা করা হয়েছে।
বার্ড ফ্লু একটি মারাত্মক রোগ, যা বন্য পাখির মাধ্যমে দ্রুত ছড়ায়। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে তা পোলট্রি শিল্প এবং ডিমের বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
ডিমের দাম এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রতি ডজন ৪.৮২ ডলারে পৌঁছেছিল, যা পরবর্তীতে আগস্টে কমে ২.০৪ ডলারে নেমে আসে। তবে এরপর থেকে দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বার্ড ফ্লু’র কারণে এ পর্যন্ত প্রায় ১৬ কোটি ৮০ লক্ষাধিক পাখি মেরে ফেলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিমের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস