যুক্তরাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর গ্রাহকদের হয়রানির এক উদ্বেগজনক চিত্র সম্প্রতি তুলে ধরেছে ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য অবজারভার’। প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে, বিলিং সংক্রান্ত ত্রুটি, ভুলবশত দেনা চাপানো এবং স্মার্ট মিটার নিয়ে জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এই সমস্যাগুলো একদিকে যেমন গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতির কারণ হচ্ছে, তেমনই তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও ফেলছে বিরূপ প্রভাব।
প্রথম ঘটনাটি হলো এ.এইচ নামের এক ব্যক্তির। পুরনো একটি বিলিং সিস্টেমে ত্রুটির কারণে ব্রিটিশ গ্যাস তার কাছ থেকে অতিরিক্ত ১,৫০০ পাউন্ড দাবি করে বসে। এমনকি তার ক্রেডিট স্কোরও ব্যাপক হারে কমে যায়। যদিও এ.এইচ নিয়মিত বিল পরিশোধ করছিলেন, তবুও তাকে এই পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। পরে অবশ্য ব্রিটিশ গ্যাস তাদের ভুল স্বীকার করে এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাত্র ৫০ পাউন্ড দিতে রাজি হয়।
আরেকটি ঘটনা, যেখানে ওভো নামের একটি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা, এ.এন.-এর বাবার কাছে একটি খালি ফ্ল্যাটের বিদ্যুৎ বিল পাঠায়। অথচ তিনি ওই ফ্ল্যাটে কখনো যাননি। ওভো কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা ফ্ল্যাটের ঠিকানা শনাক্ত করতে সমস্যায় পড়েছিল। পরে অবশ্য এ.এন.-এর পরিবারকে হয়রানির শিকার হতে হয় এবং তাদের ক্রেডিট রেটিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তৃতীয় ঘটনাটি হলো আর.এম নামের এক নারীর। তার স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হলেও সেটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়নি। ফলে তিনি গত সাত মাস ধরে কোনো বিল পাননি। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ইডিএফ তার সমস্যার সমাধানে গড়িমসি করে। এমনকি একজন নিয়ন্ত্রক সংস্থার (ওম্বাডসম্যান) সিদ্ধান্তকেও তারা আমলে নেয়নি। পরে অবশ্য ইডিএফ ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছুটা অর্থ দিতে রাজি হয়।
এই ঘটনাগুলো থেকে বোঝা যায়, উন্নত বিশ্বে যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, সেখানেও বিদ্যুৎ সরবরাহ খাতে গ্রাহক হয়রানির ঘটনা ঘটছে। সঠিক বিলিং এবং নির্ভরযোগ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সংস্থাগুলোর চরম গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। গ্রাহকদের অধিকার রক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।
বাংলাদেশেও বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সরবরাহ খাতে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। অনেক সময় ভুল বিল দেওয়া, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা অথবা হয়রানির শিকার হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। তাই, গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষায় উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
তথ্য সূত্র: দ্য অবজারভার